মো.মুক্তার হোসেন বাবু : অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম বলেছেন,বিশ্বে এখন মুক্তবাজার অর্থনীতি। একই ধরনের দেশি ও বিদেশি শিল্প থাকলে দেশি শিল্পকে বেশি সুবিধা দেওয়া যায় না। এটি হলে বিদেশি বিনিয়োগ আসবে না। তারা বলবে এক দেশে দুই আইন। এনবিআর শুধু রাজস্ব আদায় করছে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, দক্ষ জনশক্তি তৈরি, উন্নত মানুষ তৈরিতে প্রণোদনা দিচ্ছি। ঢাকা চট্টগ্রামে প্রচুর হাসপাতাল হয়েছে। চাপ বাড়ছে। তাই শিক্ষা স্বাস্থ্য সারা দেশে ছড়িয়ে দিতে চাই। ক্ষুদ্র ও মাঝারি থেকে ভারী শিল্পে মনোযোগ দিয়েছি। সাপোর্ট দিয়েছি। লোকাল রিসোর্স বাড়াতে চাই। কর নেটের আওতা বাড়াতে চাই। আরও বাড়ানোর সুযোগ আছে। আমরা মনে করি রাইট ট্রেকে আছি। যে কেউ ইটিআইএন নিতে পারছে। রিটার্ন জমা দেয়নি, মারা গেছে তারা নিবন্ধন বাতিল করেনি। তাই রিটার্ন দাখিলকারীর হিসাব মিলে না। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ৩৭ লাখ। জুনে ৪০ লাখ হবে আশাকরি। ২০২০ সালের জুন ভ্যাট রেজিস্ট্রেশন ছিল ২ লাখ। এখন তা পাঁচ লাখের কাছাকাছি। আমাদের গ্রাজুয়েশন চ্যালেঞ্জ আছে। লোকাল রিসোর্স মুভিলাইজেশন করতে হবে। আমাদের সহযোগিতা করুন। দেশাত্মবোধের জায়গায় নিজেকে তৈরি করতে হবে।
গতকাল বৃহস্পতিবার আগ্রাবাদের ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারের বঙ্গবন্ধু কনফারেন্স হলে চট্টগ্রাম চেম্বার আয়োজিত প্রাকবাজেট মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। এনবিআর সদস্য মাসুদ সাদিক বলেন, বাংলাদেশকে বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে হবে। আমি মনে করি আমাদের ব্যবসায়ীরা স্মার্ট। বিশ্বাস থাকলে তারা ভালো করবেন। অপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিকে নিরুৎসাহিত করতে হবে। প্রতিবছর আবাদি জমির ১ শতাংশ হারিয়ে যাচ্ছে। খাদ্য উৎপাদন স্বাভাবিক রাখতে সার, বীজ, কীটনাশকে শূন্য শুল্কহার রেখেছি। কৃষি যন্ত্রপাতিতে শুল্কহার কম রাখা হয়েছে। মেশিনারি আমদানিতে ১ শতাংশ শুল্ক দিতে হয়। এ সুবিধা নিয়ে বড় বড় শিল্প, ব্যাকওয়ার্ড লিংকেজের শিল্প গড়ে উঠবে আশা করে এনবিআর। দেশে মোবাইল ফোন, রেফ্রিজারেটর, এসি, মোটরসাইকেল তৈরি ও সংযোজন হচ্ছে। লিফট তৈরির কারখানা গড়ে উঠেছে।
স্বাগত বক্তব্যে চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজ বলেন, জাতীয় বাজেট প্রণয়নে চট্টগ্রাম চেম্বার সবসময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে আসছে। এ কারণে স্বাধীনতাপূর্ব সময়ে এ চেম্বার মিনি পার্লামেন্ট হিসেবে পরিচিত ছিল। এবার আয়কর বিষয়ে ৪৬টি, ভ্যাট খাতে ২০টি ও শুল্ক বিষয়ে ৯৮টি প্রস্তাবনা দিয়েছি। সরকারি বেসরকারি খাত একযোগে কাজ করলে স্মার্ট বাংলাদেশ হবে। কর পদ্ধতিতে বড় রিফরমেশন প্রয়োজন হবে। দেশি শিল্পের প্রসারে ভূমিকা রাখতে হবে।
চেম্বারের সিনিয়র সহ সভাপতি তরফদার মো. রুহুল আমিন বলেন, দেশের উন্নয়নের জন্য কর ভ্যাট দিতে হবে। আমরা চাই কর ও ভ্যাট আদায় সহজীকরণ করা হোক। নন প্রফিট অর্গানাইজেশন, সামাজিক প্রতিষ্ঠানকে কর অব্যাহতি দেওয়ার আহ্বান জানাই। ব্যবসায়ীরা খুব কষ্টে আছি এইচএস কোড নিয়ে, অনিচ্ছাকৃত ভুলে ২০০ শতাংশ কর দিতে হচ্ছে। এর ফলে ওই পণ্য ছাড় নিতে পারে না।
সভায় জানানো হয়, আয়করে ব্যবসাবান্ধব পরিবর্তনের অংশ হিসেবে বাংলায় সহজবোধ্য আয়কর আইন প্রণয়ন করা হয়েছে। করপোরেট করহার ক্রমান্বয়ে কমানো হয়েছে। মেড ইন বাংলাদেশকে প্রমোট করা হচ্ছে। বড় শহরগুলোর বাইরে হাসপাতাল স্থাপন করলে ১০ বছর করমুক্ত রাখা হয়েছে।
চেম্বার সভাপতি ওমর হাজ্জাজের সভাপতিত্বে সভায় কাস্টমস, মূসক, আয়কর সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রস্তাবনা তুলে ধরেন আলোচনা করেন বিএসআরএমের এমডি আমীরআলী হোসাইন, টিকে গ্রুপের অ্যাডভাইজার মো. জাফর আলম, পিএইচপির পরিচালক জহিরুল ইসলাম রিংকু, কনফিডেন্স সিমেন্টের এমডি জহির উদ্দিন, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু, চট্টগ্রাম চেম্বার পরিচালক একেএম আকতার হোসেন, মাহফুজুল হক শাহ, অঞ্জন শেখর দাশ, আকতার পারভেজ, রাকিবুর রহমান টুটুল, দোকান মালিক সমিতির সভাপতি সালেহ আহমদ, ফেনী চেম্বারের পরিচালক বিলাস চন্দ্র, লুব রেফ বিডির এমডি মোহাম্মদ ইউসুফ প্রমুখ।