চট্টগ্রামে কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় ৫ আসামী রিমান্ডে

মো.মুক্তার হোসেন বাবু : চট্টগ্রাম মহানগরীতে এক কলেজ ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলায় ৫ আসামীর তিনদিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন একটি আদালত। গতকাল সোমবার পুলিশের ৫ দিনের রিমান্ড আবেদনের প্রেক্ষিতে চট্টগ্রাম মেট্টোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আল ইমরান এই আদেশ দেন। রিমান্ডপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, সাইমুন ইসলাম সাকিব (২২), আসিফ ইকবাল (২৫), মো. মহিউদ্দিন (২২), মোশাররফ হোসেন আকাশ (২২) ও রাজিব হোসেন নয়ন (২২)। আজ মঙ্গলবার থেকে এদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে পুলিশ জানায়।
জানা গেছে, এলাকায় আড্ডা দিয়ে এবং মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়েই দিন পার করত আসামীরা। একই বয়সী বেপরোয়া স্থানীয় কিছু বখে যাওয়া তরুণ একত্রিত হয়ে প্রায়ই নানা অপরাধ ঘটায় এলাকায়। পথচলতি নারীদের ইভটিজিং, ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে চাঁদা আদায়, চাঁদা না দিলে নানা ছুতোয় মারধরও করে তারা। মূলত বাদুরতলা জঙ্গিশাহ মাজার এলাকায় সব ধরনের অপকর্মের হোতা এরাই। ভয়ে কেউ মুখ না খোলায় প্রতিবারই অনায়াসে পার পেয়ে যায় তারা। এ দলের ৫ জন ডিবি পুলিশ পরিচয়ে বাসায় ঢুকে এক ছাত্রীকে ধর্ষণ করেছে। বাসায় থাকা আরও একজনকে যৌন হয়রানি করেন তারা। ঘটনার শিকার দুইজন চট্টগ্রাম কলেজে মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী মামলা দায়েরের পর জড়িত ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
পুলিশ জানায়, গত ৭ জুলাই চকবাজার থানাধীন বাদুরতলা জঙ্গিশাহ মাজার এলাকায় ঘটনাটি ঘটলেও ধর্ষিতা ছাত্রী থানায় মামলা দায়েরের পর বিষয়টি জানাজানি হয়। দীর্ঘদিন যাবত দুই ছাত্রী ও তাদের একজনের মা জঙ্গিশাহ মাজার এলাকার একটি বাসায় ভাড়া বাসায় থাকতেন। ঘটনার দিন ছাত্রীর মা বাসায় ছিলেন না। ওইদিন সন্ধ্যায় তাদের বাসায় একজন পুরুষ সহপাঠী ও শিক্ষক যান। এ সময় দুইজন পুরুষকে বাসায় ঢুকতে দেখে ফন্দি আঁটে পেপরোয়া এ গ্রæপটি। বাসার এই চারজনকে ফাঁদে ফেলে টাকা হাতিয়ে নেয়ার পরিকল্পনা করে তারা। এ ফন্দিতে তারা বাসায় ঢুকে প্রথমেই দুই পুরুষকে নগ্ন করে তাদের মাঝখানে এক ছাত্রীকে বসিয়ে ছবি তুলে। এরপর সেই ছবি ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা দাবি করে। টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় এ কিশোরেরা এক ছাত্রীকে ধর্ষণের চেষ্টা করলে তিনি অজ্ঞান হয়ে পড়েন। এসময় অপর ছাত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে গ্রেফতারকৃত সাকিব। পরে বখাটেরা দ্রæত ওই বাসা থেকে সাড়ে সাত হাজার টাকা ও দুই পুরুষের কাছে থাকা দুটি মোবাইল সেট নিয়ে পালিয়ে যায়।চকবাজার থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, ঘটনার পর মানসিকভাবে ভেঙে পড়া মহিলারা লজ্জায় প্রথমে মামলা না করার সিদ্ধান্ত নিলেও পরে একজন মামলা করেন। ঘটনা শুনেই আমরা অভিযানে গিয়ে ধর্ষকসহ জড়িত পাঁচজনকে গ্রেফতার করি। আজ (গতকাল) সোমবার এদের রিমান্ড মঞ্জুর হয়েছে। আশা করি অনেক তথ্য বের করতে পারবো।

সর্বশেষ