রোহিঙ্গা বিদ্রোহী সংগঠন আরসার প্রধান আতাউল্লাহ ও সহযোগীসহ ১০ জন গ্রেপ্তার

নিজস্ব প্রতিবেদক

মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের বিদ্রোহী সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা স্যালভেশন আর্মির (আরসা) প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনী ও তাঁর ও সহযোগীসহ সংগঠনটির সঙ্গে জড়িত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র‍্যাব–১১। গত সোমবার ও মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ময়মনসিংহ শহরে অভিযান চালিয়ে তাঁদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় নাশকতার ষড়যন্ত্রের মামলা হয়েছে।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন— আরসার কমান্ডার আতাউল্লাহ (৪৮), সেকেন্ড ইন কমান্ড মোস্তাক (৬৬), মনিরুজ্জামান (৩৩), সলিমুল্লাহ (২৭), মোসা. আসমাউল হুসনা (২৩), আসমত উল্লাহ(২৪), মো. হাসান (৪৩), মোসা. শাহিনা(২২) এবং ১৫ ও ১৭ বছর বয়সী দুই কিশোর-কিশোরী।

- Advertisement -

এদের মধ্যে মনিরুজ্জামান সিদ্ধিরগঞ্জে ভূমিপল্লী আবাসিক এলাকার বাসিন্দা। তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার চর আলগী এলাকায়। তার বাবার নাম আতিকুল ইসলাম। বাকিরা সবাই রোহিঙ্গা।
র‍্যাব সদর দপ্তরের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. ক. আশিকুর রহমান আজকের পত্রিকাকে বলেন, গোয়েন্দা সংবাদের ভিত্তিতে র‍্যাবে দুটি দল গত রোববার (১৬ মার্চ) ভোররাতে মময়মনসিংহের নতুন বাজার মোড় থেকে চারজনকে এবং গতকাল সোমবার রাতে (১৭ মার্চ) সিদ্ধিরগঞ্জের ভুমিপল্লী আবাসিক এলাকায় ভূমিপল্লী টাওয়ার থেকে আরসার প্রধান আতাউল্লাহ আবু আম্মার জুনুনীসহ ছয় জনকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে মোট ৫১ লাখ ৩৯ হাজার ১০০ নগদ টাকা, ইউএস ডলার ও মালয়েশিয়ার রিঙ্গিতসহ অন্যান্য কিছু বৈদেশিক মুদ্রা, আরসার কমবাট ইউনিফর্ম, মোবাইল ফোন, চাকু, স্টিলের চেইন ও ঘড়িসহ বেশ কিছু আলামত উদ্ধার করা হয়। পরে থানায় হস্তান্তর করা হয়।

গ্রেপ্তারের পর আরসার প্রধানসহ দশজনের বিরুদ্ধে মামলা করে র‍্যাব তাঁদের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। আজ গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার দুটি মামলায় ১০ দিন করে রিমান্ড চাওয়া হয়। জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মো. মঈনউদ্দিন কাদির ৫ দিন করে মোট ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আদালত পুলিশের পরিদর্শক মো. কাইউম খান এতথ্য জানান।

২০১৭ সলে ১৫ আগস্ট আরসা বিদ্রোহীরা মিয়ানমারের রাখাইনে একযোগে ২৪টি পুলিশ পোস্ট এবং ৫৫২তম লাইট ইনফ্যান্ট্রি ব্যাটালিয়ন সেনাঘাঁটিতে সমন্বিত আক্রমণ শুরু করে। এতে অন্তত এক ডজন সামরিক ব্যক্তি নিহত হন। এরপর জান্তা সরকার রাখাইনে একযোগে অভিযান শুরু করে; গণহত্যা চালায়। লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এখন ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের উখিয়া, টেকনাফের বিভিন্ন ক্যাম্পে বসবাস করছে।

আরসা রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জন্য স্বাধীন রাষ্ট্র গঠনসহ বিভিন্ন অধিকারের কথা বললেও এই সংগঠনকে সমর্থনের বিষয়ে রোহিঙ্গাদের মধ্যে বিভক্তি আছে।

টেকনাফ ও উখিয়াতে রোহিঙ্গা ক্যাম্পে হত্যা, ডাকাতি ও মাদক ব্যবসায় আরসার ইন্ধন রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মহিবুল্লাহ হত্যার অভিযোগও আছে আরসার বিরুদ্ধে।

সর্বশেষ