গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষার্থীদের মুক্তির দাবি, মির্জা ফখরুলের

 

- Advertisement -

গত রবিবার রাজধানীর কুর্মিটোলায় উড়াল সেতুর ঢালে শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজের অপেক্ষমান দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহতের ঘটনায় সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর পদত্যাগ, নিরাপদ সড়ক ও ঘাতক বাসচালকের শাস্তিসহ ৯ দফা দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে উদ্ভুত পরিস্থিতি সামাল দিতে সরকারের ব্যর্থতায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

তিনি আজ এক বিবৃতিতে বলেন “বাংলাদেশে বর্তমান সরকার সকল ক্ষেত্রে সীমাহীন ব্যর্থতায় পর্যবসিত। সরকারের প্রশ্রয়ে দুস্কৃতিকারিদের দাপট এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, এই দেশে এখন মানুষের জীবন-জীবিকা চরমভাবে নিরাপত্তাহীন। মানুষের ক্ষোভের আঁচ উপলব্ধি করতে পারে না বলেই সরকার গণবিরোধী বেপরোয়া কর্মকান্ডে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। কোমলমতি কিশোর-কিশোরী ছাত্র-ছাত্রীদেরও জীবন ঝরে পড়াটাও দু:শাসনের ফলশ্রুতি। শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজের দুই শিক্ষার্থী বাসচাপায় নিহত হওয়ার পরে যখন সমগ্র বাংলাদেশের মানুষ বেদনার্ত, শোকাহত ও ক্ষুদ্ধ, তখন ছাত্র-ছাত্রীর লাশ নিয়ে নৌ-মন্ত্রীর হাসি যেন বিদ্রুপের হাসি।

নৌ-মন্ত্রী শাহজাহান খান যিনি পরিবহন সেক্টরের একজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা, সুতরাং তার আশকারায় দীর্ঘদিন ধরে এই সেক্টরে অরাজকতা লেগেই আছে। কিছু প্রশিক্ষণহীন অদক্ষ চালক ও লাইসেন্সবিহীন কমবয়েসী চালক এবং চলাচলে অনুপযুক্ত যানবাহনের প্রাধান্য থাকলে সড়ক-মহাসড়কে মরণঘাতি ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বাড়তেই থাকবে।
আর এগুলো প্রাধান্য পাচ্ছে শুধুমাত্র নৌ মন্ত্রী শাহজাহান খানের প্রশ্রয়ে।

বাসচাপায় শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজের দুই শিক্ষার্থী’র হৃদয়বিদারক মৃত্যুতে দেশজুড়ে মানুষ ক্ষোভে ফেটে পড়লেও তাতে সরকারের বিন্দুমাত্র টনক নড়েনি, বরং বেপরোয়া বাসচালকের দ্বারা এই মর্মান্তিক হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে আন্দোলনরত ছাত্র-ছাত্রীদের লক্ষ্য করে গুলি, টিয়ার গ্যাস ও বেধড়ক লাঠিচার্জে যেভাবে ক্ষতবিক্ষত করেছে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী তা কেবল নিষ্ঠুর স্বৈরশাসকদের দ্বারাই সম্ভব। ন্যায় বিচার না পাওয়া, বঞ্চিত, প্রতিবাদী ছাত্র-ছাত্রীদেরকে হিং¯্র আক্রমণে আহত করার পর অনেককে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে। আমি শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারের এই অমানবিক আক্রমণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত শিক্ষার্থীর মুক্তি দাবি করছি।
ভোগ-লালসায় মত্ত ক্ষমতাসীনরা মানবিক বিবেচনাগুলো পদদলিত করছে। দুই শিক্ষার্থীর এই মর্মস্পর্শী নিহত হওয়ার ঘটনার পরও সরকারের নির্লিপ্ত উদাসীনতা হঠকারী বাসচালকদেরকে উৎসাহিত করেছে। গতকালও একজন শিক্ষার্থী কুমিল্লায় গাড়ী চাপায় নিহত হয়েছেন। ক্ষমতাকুক্ষিগত করা জবাবদিহিহীন সরকার শুধুমাত্র ন্যায়সঙ্গত আন্দোলনকে নির্দয়ভাবে দমন করতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে বলেই অপরাধীরা প্রকাশ্যে আইন নিজের হাতে তুলে নিচ্ছে। বারবার সংঘটিত শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে সব বয়েসী মানুষের সড়ক-মহাসড়কে দূর্ঘটনায় মর্মান্তিক জীবনহানীর জন্য দায়ী পরিবহন সেক্টরের বিশৃঙ্খলা, যার মদদদাতা হচ্ছে সরকার।

সরকারের সামগ্রিক ব্যর্থতার জন্যই সর্বক্ষেত্রে অধ:পতন শুরু হয়েছে। বর্তমানে সড়ক-মহাসড়কে প্রতিদিন দূর্ঘটনায় প্রাণহানীর সংখ্যা মাত্রাতিরিক্ত বৃদ্ধি পেয়েছে। আমি পরিবহন সেক্টরের বিশৃঙ্খলার উস্কানিদাতা নৌ-মন্ত্রী শাহজাহান খানের পদত্যাগ দাবি করছি। কান্ডজ্ঞানহীন চালকদের দ্বারা গাড়িচাপায় নিষ্পাপ শিক্ষার্থীদের নিহতের ঘটনার আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমি অবিলম্বে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সাথে আলোচনা করে উদ্ভুত সংকট সমাধানে আসার জন্য আহবান জানাচ্ছি। শহীদ রমিজ উদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট স্কুল ও কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ী চালকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি। একের পর এক শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি গভীরভাবে শোকাহত ও ব্যথিত। আমি নিহতদের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি।

সর্বশেষ