প্রিয় সংবাদ ডেস্ক :: টেকনাফ মেরিন ড্রাইভে পুলিশের গুলিতে অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খানের মৃত্যুর ঘটনায় টেকনাফ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার সাহাকে হেফাজতে নিয়েছে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি)। বর্তমানে তাকে বিশেষ নিরাপত্তায় কক্সবাজার নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। সেখানে তিনি আত্মসমর্পণ করবেন বলে জানা গেছে।
বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) চট্টগ্রাম থেকে প্রদীপ কুমারকে হেফাজতে নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সিএমপি কমিশনার বলেন, ‘ওসি প্রদীপ কুমার চট্টগ্রামের দামপাড়ায় পুলিশ লাইনে অবস্থিত সিএমপি’র হাসাপাতালে চিকিৎসা নিতে এসেছিলেন। সেখান থেকে তাকে আমরা হেফাজতে নিয়েছি। এখন তাকে বিশেষ নিরাপত্তায় কক্সবাজার আদালতে পাঠানো হচ্ছে। সেখানে তিনি আত্মসমর্পণ করবেন। তবে এখন তাকে সিএমপির হাতে আটক বা গ্রেফতার বলা যাবে না।’
এর আগে ওসি প্রদীপকে দুপুরে পৌনে দুইটার দিকে পুলিশ লাইনের সিএমপি হাসপাতাল থেকে বের করা হয়। পরে তাকে একটি গাড়িতে তুলে আরও দুটি গাড়ি স্কট করে কক্সবাজারের দিকে রওনা হয়। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত এই প্রতিবেদক গাড়িগুলোকে অনুসরণ করছিল।
মেজর সিনহার মৃত্যুর ঘটনায় তার বড় বোনের দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি ছিলেন প্রদীপ। মামলায় তার বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছিলেন আদালত। এর আগে, গতকাল বুধবার (৫ আগস্ট) রাতে তাকে প্রত্যাহার করা হয়। এ নিয়ে এ ঘটনায় মোট ১৫ জনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ সদর দফতর।
গত শুক্রবার (৩১ জুলাই) রাত ৯টার দিকে টেকনাফের বাহারছড়ায় কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে মারা যান অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা রাশেদ খান। এ ঘটনায় বুধবার মেজর সিনহার বড় বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস কক্সবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সিনহা একটি তথ্যচিত্র ধারণের কাজ করছিলেন। ৩১ জুলাই রাতে ওই দিনের শুটিং শেষ হলে তিনি টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ দিয়ে ফিরছিলেন। শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে তার গাড়ির গতিরোধ করা হলে তিনি অবসরপ্রাপ্ত মেজর পরিচয় দিলেও পুলিশ তাকে লাঞ্ছিত করে এবং একপর্যায়ে পুলিশ পরিদর্শক তাকে গুলি করলে তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনায় বুধবার সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ ও পুলিশের মহাপরিদর্শকের (আইজিপি) নেতৃত্বে সেনা ও পুলিশ সদর দফতরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কক্সবাজার পরিদর্শন করেন। তারা সেখানকার সেনা ও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। পরে সেনাপ্রধান ও আইজিপি এক যৌথ ব্রিফিংয়ে অংশ নেন।
যৌথ ব্রিফিংয়ে তারা বলেন, পুলিশের গুলিতে মেজর সিনহার মৃত্যুর ঘটনাটি বিচ্ছিন্ন বলে মনে করছে দুই বাহিনী। এ ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জয়েন্ট এনকোয়ারি টিম গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির ওপর সেনাবাহিনী ও পুলিশের পূর্ণ আস্থা রয়েছে। তদন্তে এ ঘটনায় জড়িত হিসেবে যাদের নাম বেরিয়ে আসবে, তাদের বিচার হবে জানিয়ে সেনাপ্রধান ও আইজিপি বলেন, ব্যক্তি অপরাধের দায় কোনো প্রতিষ্ঠানের বা বাহিনীর হবে না। সূত্র:: সারাবাংলা