গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের দায়ে দণ্ডিত ডেসটিনি গ্রুপের প্রেসিডেন্ট সাবেক সেনাপ্রধান হারুন-অর-রশীদকে ছয় মাসের জামিন দিয়েছে হাই কোর্ট।
আদালতের নির্দেশে তার স্বাস্থ্য পরীক্ষার প্রতিবেদন দাখিলের পর মঙ্গলবার শুনানি শেষে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাই কোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেয়।
আদালতে জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী রবিউল আলম বুদু। দুদকের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক।
জামিনের বিষয়ে হারুন-অর-রশীদের আইনজীবী রবিউল আলম বুদু বলেন, “তিনি একজন রীব মুক্তিযোদ্ধ, যিনি সেনাবাহিনীরপ্রধান ছিলেন, অস্ট্রেলিয়ার সাবেক হাই কমিশনার, মিশনে বহু কাজ করেছেন। জাতিসংঘে কাজ করেছেন। তার সুনামের বহু সার্টিফিকেট আছে। সেগুলো আমরা আদালতে উপস্থাপন করেছি।
“মাত্র চার বছরের জেল হয়েছে, ৪৬ জনের মধ্যে তিনি একজন। এর আগেও মামলায় অভিযুক্ত হওয়ার সময় আদালতে তিনি আত্মসমর্পণ করেছিলেন। কোর্টকে বলেছি- আমরা সব সময় আইন মেনে চলেছি, আইন মেনে চলবো। এসব শুনে কোর্ট সন্তুষ্ট হয়ে ৭৫ বছর বয়সী উনাকে ছয় মাসের জন্য জামিন দিয়েছে।”
এর আগে জামিন আবেদনের শুনানির পর গত ২৯ জুন জারুনের চিকিৎসার জন্য মেডিকেল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়ে প্রতিবেদন চেয়েছিল হাই কোর্ট।
মুক্তিযোদ্ধা সেনা কর্মকর্তা হারুন সেনাপ্রধানর দায়িত্ব পালনের পর ২০০২ সালে অবসরে যান। এর কয়েক বছর পর যোগ দেন বিতর্কিত প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি গ্রুপে।
গ্রাহকের অর্থ আত্মসাৎ ও পাচারের এক মামলায় গত ১২ মে হারুন এবং কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল আমীনসহ ৪৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড এবং ২ হাজার ৩০০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেন ঢাকার চতুর্থ বিশেষ জজ আদালতের বিচারক শেখ নাজমুল আলম।
এর মধ্যে রফিকুল আমিনকে ১২ বছর কারাদণ্ড এবং ২০০ কোটি টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৩ বছরের সাজা দেওয়া হয়।
আর হারুন-অর-রশীদকে ৪ বছর কারাদণ্ড এবং সাড়ে ৩ কোটি টাকা অর্থদণ্ড, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ড দেয় আদালত।
গত ৯ জুন হারুন-অর-রশীদ দণ্ডের বিরুদ্ধে আপিল করলে তা শুনানির জন্য গ্রহণ করে হাই কোর্ট। এরপর দুই দিন শুনানি শেষে মঙ্গলবার তার জামিন মঞ্জুর হল।
১০ বছর আগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) দায়ের করা এ মামলায় ডেসটিনি মাল্টিপারপাস কো অপারেটিভ সোসাইটির প্রায় ১ হাজার ৮৬১ কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়