চট্টগ্রামে সড়কে টেম্পো স্টেশন যানজটে দূর্ভোগ বাসিন্দান্দের

মো.মুক্তার হোসেন বাবু : চট্টগ্রামে ব্যস্ততম সড়কে টেম্পো স্টেশন গড়ে উঠায় প্রতিনিয়ত যানজট সৃষ্টি হয়ে চলাচলরত বাসিন্দাদের দূর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দৈনিক প্রতিটি টেম্পো থেকে ৫০ টাকা করে চাঁদা নিয়ে এখানে স্টেশন গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছে এমনটি অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।এক্ষেত্রে স্থানীয়দের দূর্ভোগ পোহানো ছাড়া আর কিছু করার থাকেনা। কেউ কিছু বলতে গেলে অল্পবয়সী এসব টেম্পো চালক ও হেলপাররা সংঘবদ্ধ হয়ে অনেককে নাজেহাল থেকে শুরু করে পিটিয়ে আহত করারও অভিযোগ রয়েছে। চট্টগ্রাম মহানগরীর ৮নং শুলকবহর ওয়ার্ডের ষোলশহর দুই নম্বর গেট রেল লাইনের পর থেকে মেয়র গলির মুখ পর্যন্ত সড়ক দখল করে অবৈধ টেম্পো স্টেশন নিয়ে স্থানীয়দের এমন বক্তব্য পাওয়া গেছে।
গতকাল বুধবার স্থানীয়দের অভিযোগের প্রেক্ষিতে সরেজমিনে দেখা গেছে, ফ্লাইওভারের কারণে ২নং গেট কবরস্থানের পাশ থেকে যেখানে লুপ নেমেছে সড়কের সেই অংশ পর্যন্ত সড়কটি এমনিতেই সংকুচিত হয়ে পড়েছে। তাছাড়া ব্যস্ততম এই সড়কের উপর দিয়ে রেললাইন ক্রস করার কারণে দিনে কয়েকবার সেখানে যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকে। ফ্লাইওভারের লুপটি নির্মিত হওয়ার পর থেকেই সড়কের একাংশ দখল করে গড়ে উঠেছে এই অবৈধ টেম্পো স্টেশন। সারিবদ্ধভাবে দীর্ঘ লাইন দিয়ে মেয়র গলির মুখ পর্যন্ত সড়কের একাংশ দখল করে টেম্পো দাঁড়িয়ে একের পর এক যাত্রী উঠানামা করে আসছে। গতকাল দুপুর ২টায় এ ব্যাপারে জানতে চাইলে স্থানীয় কাউন্সিলর মো. মোরশেদ আলম বলেন, এটি শহরের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সড়ক। এই সড়কের উপর টেম্পো স্টেশন বসে যাওয়ার কারণে মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে। বিষয়টি উপ-পুলিশ কমিশনারকে (ট্রাফিক) মৌখিকভাবে জানানো হয়েছে। কারণ এভাবে সড়কের উপর স্টেশন বানানো যায় না। জনদুর্ভোগ লাগবে বিকল্প ব্যবস্থা করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান।
স্থানীয় লোকজনের অভিযোগ, সোলায়মান বাদশা নামে এক ব্যক্তি প্রতিটি টেম্পো হতে দৈনিক ৫০ টাকা আদায় করে এই অবৈধ স্টেশন গড়ে তোলার সুযোগ করে দিয়েছেন। ওই ব্যক্তিই প্রশাসনের যেখানে যেভাবে ম্যানেজ করতে হয় সবকিছুই করেন। একারণে পুলিশ এসব টেম্পো চলাচলে কোন বাধা দেয় না। এমনকি এসব গাড়ির কাগজপত্রও কখনো খতিয়ে দেখা হয় না। এ বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করা হলে সিএমপি’র উপ-পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) হারুনুর রশিদ হাজারী সেল ফোনে বলেন, বিষয়টি কেউ তাকে জানায়নি। এভাবে স্টেশন বসানো যায় না উলে­খ করে বলেন, বিষয়টি তিনি গুরুত্বের সাথে দেখবেন।
এদিকে সোলাইমান বাদশা বিষয়টি স্বীকার করে এ প্রতিবেদককে বলেন, তিনি নিজে টাকা তুলেন না। তিনি নিজেকে শুলকবহর ওয়ার্ড যুবলীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক পরিচয় দিয়ে বলেন, তার কিছু অনুসারী আছে, তাদেরকে এখান থেকে সপ্তাহে ৫০০ টাকা করে দিয়ে চলার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন এবং প্রশাসনকে খুশি রাখার দায়িত্বও তিনি নিয়েছেন। তিনি ব্যক্তিগতভাবে এই স্টেশন থেকে লাভবান নন বলে দাবি করেন।
অন্যদিকে স্থানীয় বাসিন্দা ও ষোলশহর আবাসিক এলাকা মহল্লা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ হাসান খান জানান, এসব টেম্পোর সব চালক অল্প বয়সী। তাদের কারো ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে বলে মনে হয় না। কারণ তাদের যে বয়স তারা লাইসেন্স পাওয়ার কথা নয়। এসব চালক এবং হেলপারের কারণে এলাকার মানুষ অতিষ্ট উলে­খ করে বলেন, কেউ তাদেরকে কিছু বললে সবাই সংঘবদ্ধভাবে ধরে পেটায়। তারা বেপরোয়াভাবে এসব গাড়ি চালায়।

সর্বশেষ