স্থান পরিবর্তন হলেও অনিয়মের ধরন বদলায়নি পি আই বায়েজিদ মহিউদ্দিনের। চাকুরীর শুরু থেকেই চট্টগ্রামের সিএমপিতে থাকার সুবাধে অতি সহজেই জড়িয়ে পড়েছেন নানা অনিয়মের সাথে। উর্ধতনদের ম্যানেজ করতে চতুর এ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠলেও নেয়া হয়নি তেমন কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা।
সর্বশেষ টি আই প্রশাসন থাকাকালে অনিয়মের দায়ে সাবেক পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার তাকে বদলি করেন পি আই পাঁচলাইশ হিসেবে। সেখানে এসে এস আই মোমিনুলকে নিয়ে শুরু হয় আরো রমরমা কার্যক্রম। টি আই থাকাকালে সিএমপি’র কোন পয়েন্টে কি ধরনের অনিয়ম আছে তা আয়ত্বে নেন এ পুলিশ কর্মকর্তা। ফলে টি আই (ট্রাফিক পরিদর্শক) থেকে পি আই (পেট্রোল ইনসপেক্টর) হলেও অনিয়ম আর চাঁদাবাজিতে তেমন কোন সমস্যা হচ্ছেনা মহিউদ্দিনের।
ফুটপাতে অবৈধ দোকান, টং দোকান, অবৈধ পার্কিং, জুয়ার আসর, সরকারী জায়গা বেদখল, রাতে চলাচলকারী গাছের গাড়ীসহ সব পয়েন্টে টু পাইচ কালেকশানে তার রয়েছে সমান বিচরন ও দক্ষতা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে সিএমপি’র এক পুলিশ কর্মকর্তা জানান, যে কোন বিষয়ে সামারি করতে খুবই চতুর মহিউদ্দিন। তবে তাঁর মতে চাঁদাবাজি আর ধান্দাবাজি যাই করুক নিজে খায়না সবাইকে সবার প্রাপ্যটা দিয়ে দেন তিনি। এ ছাড়া অনিয়মের অভিযোগ হলে উর্ধতন কর্তাদের ম্যানেজ করতেও চতুর তিনি। যে কোন অনিয়মের আয় থেকে বড় বাবুদেরকে আগে ভাগ দেন বিধায় চরম মুহুর্তে তাঁরাও তাকে আগলে রাখেন।
সুত্র জানায়, পি আই বায়েজিদ হওয়ার সুবাধে নগরীর খুলশী, বায়েজিদ এলাকার অক্সিজেনসহ সব গুলো স্পটে চলে তার সমান উৎকোচ আদায়। রয়েছে নির্ধারিত পয়েন্টে সোর্স এবং কালেক্টর। এর আগে পি আই মহিউদ্দিনের সিনিন্ডকেট সদস্য ছিলেন সদ্য র্যাব থেকে আসা মামুনুল নামে অপর পুলিশ কর্মকর্তা। সম্প্রতি একাধিক ভুক্তভোগি পুলিশের আইজিপি এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় বরাবরে পাঠানো লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে এসব তথ্য জানা যায়।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, মহিউদ্দিন এর আগে ট্রাফিকের আগ্রাবাদ বন্দর জোনে প্রসিকিউশন দায়িত্বে থাকা অবস্থায় তার ব্যাপক দুর্নীতি, অনিয়মের বিষয়ে বিভিন্ন জাতীয় দৈনিকে প্রতিবেদন প্রকাশের পর সিএমপির তৎকালীন পুলিশ কমিশনার আবদুল জলিল মন্ডল তাকে এনায়েত বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে বদলী করেন। পরে মোটা অংকের উৎকোচ দিয়ে সার্জেন্ট প্রসিকিউশনে পোস্টিং নেন। এর পর মহিউদ্দিন মামুন সিন্ডিকেট পুরো সিএমপির ট্রাফিক বিভাগের বদলী বাণিজ্য হস্তগত করেন। ৪ বছরের অধিক সময়ে প্রসিকিউশনে থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নেন।
বিষয়টি তখনকার সিএমপির পুলিশ কমিশনারের দৃষ্টি গোচর হলে তাকে উক্ত পদ থেকে সরিয়ে ঢাকার কাঁচপুর টি আই হিসবে বদলি করা হয়। মাস ছয়েক যেতে না যেতেই উপর মহলকে হাত করে চট্টগ্রামের পি আই পাঁচলাইশ হিসবে বদলি হয়ে আসেন। এর পর সাবেক পুলিশ কমিশনার ইকবাল বাহার চৌধুরীকে ম্যানেজ করে টি আই প্রশাসন হিসবে ট্রাফিক সদরঘাটে যোগদান করেন। সদরঘাট টি আই এ্যাডমিনের দায়িত্ব নেয়ার পর শুরু হয় বিভিন্ন পয়েন্টে দায়িত্বে থাকা সার্জেন্টদের মাধ্যমে সিন্ডিকেট করে পরিবহন সেক্টরে বেপরোয়া চাঁদাবাজি।
টি আই এ্যাডমিন মহিউদ্দিনের লাগামহীন ব্যাপক দুর্নীতি জানাজানি হলে সাবেক সিএমপি কমিশনার ইকবাল চৌধুরী সদরঘাট টি আই এ্যাডমিন থেকে তাঁকে সরিয়ে পি আই বায়েজিদ হিসবে বদলি করেন। সিএমপি’র সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায় বর্তমান রাজনীতির সাথে জড়িত থাকা বড় নেতাদের হাত করে পি আই বায়েজিদ থেকে বদলি হয়ে মোটা অংকের উৎকোচের বিনিময়ে নগরীতে টি আই অথবা টি আই এ্যাডমিনের জন্য তোড় জোর শুরু করেছেন।
তবে এসব বিষয়ে পি আই বায়েজিদ মহিউদ্দিন জানান, এসব অনিয়মের সাথে তিনি জড়িত নন। তার বিরুদ্ধে এসব ষঢ়যন্ত্র ও অপপ্রচার। বর্তমানে তিনি পি আই বিধায় ট্রাফিক সেক্টর বা কোন স্পটে অনিয়ম করার কোন সুযোগ নেই। বিষয়টি নিয়ে সহকারী পুলিশ কমিশনার (বায়েজিদ) জোন মো. সোহেল রানার সাথে কথা বলার চেষ্টা করা হলে তিনি একটি সালিশী বৈঠকে আছেন উল্লেখ করে পরে কথা বলবেন বলে জানান। সূত্র:দেশ সংবাদ