spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

খালেদা জিয়াকে এবারও কারাগারেই ঈদ করতে হবে

spot_img

 

- Advertisement -

দীর্ঘ ৬ মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। এর মধ্যে কারাগারেই কাটিয়েছেন পবিত্র ঈদুল ফিতর। আর কদিন বাদেই আসেছে ঈদুল আযহা। তবে সবগুলো মামলায় জামিন না হওয়ায় এবারও ঈদের আগে মুক্তি মিলছে না বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা। এছাড়া প্যারোলে মুক্তির জন্য তার আইনজীবীরা কোন আবেদন করবেন না বলেই শুনা যাচ্ছে। তাই এবারও কারাগারেই ঈদ করতে হতে পারে খালেদা জিয়াকে।

মূলত জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় ৫ বছরের সাজা মাথায় নিয়ে চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাগারে যান খালেদা জিয়া। এর পর থেকে মুক্তির জন্য শুরু হয় আইনী লড়াই। তবে সে লড়াই যেন শষে হতে চাচ্ছেনা। যদিও হাল ছাড়ছেন না তার আইনজীবীরা। খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা জানিয়েছেন মুক্তি পেতে হলে এখনো ৫ মামলায় জামিন নিষ্পত্তি হতে হবে। আর এসব জামিন নিশ্চিত হলেই মিলবে তার মুক্তি। তবে আইনী লড়াই শেষে দ্রুতই মুক্তি পেয়ে দলের হাল ধরবেন খালেদা জিয়া, এমনটাই আশা আইনজীবী ও দলের নেতা-কর্মীদের।

এদিকে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল এ প্রতিবেদককে বলেন, খালদো জিয়াকে অন্যায় এবং অবৈধভাবে যে মামলায় সাজা দেওয়া হয়েছে সেটিতে গত ১২ মার্চ জামিন পেয়েছেন তিনি। আর সে জামিনের প্রেক্ষিতেই তার মুক্তি পাওয়ার কথা। কিন্তু সরকারের অন্যায় হস্তক্ষেপের মাধ্যমে জামিন প্রলম্বিত করা হচ্ছে। জামিনে মুক্ত হয়েই খালেদা জিয়া অন্যান্য মামলাগুলোতে হাজিরা দিতে পারতেন। ঢাকা নড়াইলসহ সবগুলো মামলাই জামিন যোগ্য। এই পরিস্থিতিতে তাকে আটক রাখাটা সম্পূর্ণ অবৈধ।

কায়সার কামাল বলেন, উনি (খালেদা জিয়া) সাবেক প্রধানমন্ত্রী এবং একটি বড় দলের নেত্রী হিসেবে আটক রাখা উচৎ হচ্ছেনা। কারণ সেসব মামলার কোনটিতেই এফআইআরএ তার নাম ছিলনা। আর মামলাগুলোর আসামিরা সবাই জামিনে মুক্ত রয়েছে। আমরা মনে করে আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে সরকার আইনের কুট কৌশলের আশ্রয় নিয়ে তাকে আটকে রেখেছে। এটা রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের অংশ। আইনগতভাবেই মুক্ত হওয়ার উপাদান থাকা সত্ত্বেও কেবল সরকারের হস্তক্ষেপের কারনে তিনি মুক্তি পাচ্ছেননা বলে জানান এই আইনজীবী।

খালেদা জিয়ার অপর আইনজীবী সানাউল্যা মিয়া এ প্রতিবেদককে বলেন, ঈদের আগে মুক্তি সম্ভব হচ্ছেনা। পরে যদি হয়। কারন কুমিল্লার হত্যা মামলাটা আবার নতুন করে শুরু করতে হচ্ছে। তবে অন্য যেগুলো আছে সবই জামিন যোগ্য মামলা। সেগুলোর ক্ষেত্রে জামিন পেতে খুব একটা সমস্যা হবেনা। তাই ঈদের পরই খালেদা জিয়া মুক্তি পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।

জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা : জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার আপিল আবেদনের ১৪তম দিনের শুনানি রয়েছে আজ রোববার। গত বৃহস্পতিবার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের বেঞ্চে ১৩তম দিনের মতো শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বুধবার এ মামলায় খালেদা জিয়ার জামিন চতুর্থ দফায় ১৩ আগস্ট পর্যন্ত বৃদ্ধি করেন হাইকোর্ট। যা আগামীকাল শেষ হচ্ছে। এখন আবারও তার আইনজীবীদের আবেদন করতে হবে জামিনের মেয়াদ বাড়ানোর জন্য।

কুমিল্লার হত্যা মামলা : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে হত্যা মামলায় হাইকোর্টে রুল শুনানি শেষে নট প্রেস করা হযেছে। এখন কুমিল্লার বিচারিক আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবীরা।

ঢাকায় মানহানির মামলা : মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ও শহীদ বুদ্ধিজীবীদের নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য করার অভিযোগে দায়ের করা মানহানীর মামলায় গত সপ্তাহে খালেদা জিয়ার জামিন নামঞ্জুর করেছেন ঢাকার একটি আদালত। তাই এ মামলায় চলতি সপ্তাহেই হাইকোর্টে জামিন আবেদন করা হবে বলে জানিয়েছেন তার আইনজীবী এহ্সানুর রহমান।

কুমিল্লার নাশকতার দুই মামলা : কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রলবোমা হামলার ঘটনায় নাশকতার এক মামলায় খালেদা জিয়াকে হাইকোর্টের দেয়া ছয় মাসের জামিন স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের বিষয়ে আজ রোববার আদেশ দেবেন আপিল বিভাগ। প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের চার সদস্যের বেঞ্চে আবেদনটি কার্যতালিকায় দুই নম্বরে রয়েছে। এছাড়া নাশকতার অপর মামলায় আগামীকাল আদেশ দিবেন হাইকোর্ট।

নড়াইলের মানহানি মামলা : নড়াইলে দায়ের করা মানহানির মামলায়ও খালেদা জিয়াকে জামিন নিতে হবে। গত ৫ আগস্ট নড়াইলের আদালতে মানহানি মামলায় জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন নড়াইল জেলা ও দায়রা জজ আব্দুল আহাদ শেখের আদালত। পরে হাইকোর্টে জামিন চেয়ে আবেদন করেন তার আইনজীবীরা। আজ রোববার বিচারপতি মুহাম্মদ আবদুল হাফিজ ও বিচারপতি কাশেফা হোসেনের বেঞ্চে জামিন বিষয়ে শুনানি হতে পারে বলে ব্যারিস্টার কায়সার কামাল জানিয়েছেন। ২০১৫ সালের ২৪ ডিসেম্বর খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নড়াইল সদর আমলি আদালতে এ মামলা করা হয়।

এ ছাড়া বেগম খালেদা জিয়াসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতি মামলায় অভিযোগ গঠন বিষয়ে শুনানির জন্য আজ রোববার তারিখ ধার্য রয়েছে। রাজধানীর বকশীবাজারের আলিয়া মাদরাসা মাঠে স্থাপিত বিশেষ জজ আদালত ২-এ এ মামলার শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।

প্রসঙ্গত, এ বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় খালেদা জিয়ার পাঁচ বছর কারাদ- হয়। একইসঙ্গে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানসহ অপর পাঁচ আসামিকে ১০ বছর করে দ- দেন বিচারিক আদালত। ১৯ ফেব্রুয়ারি রায়ের সার্টিফায়েড কপি হাতে পান খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা। এরপর হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় ২০ ফেব্রুয়ারি আপিল করেন খালেদা জিয়া। অন্যদিকে খালেদা জিয়ার সাজা বৃদ্ধিতে দুদক আবেদন করলে হাইকোর্ট রুল জারি করেন। এছাড়া ১০ বছরের দ-প্রাপ্ত মাগুরার সাবেক এমপি কাজী সালিমুল হক কামাল এবং ব্যবসায়ী শরফুদ্দিনও হাইকোর্টে আপিল করেন। যার শুনানি চলছে এখন।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ