ডেস্ক রিপোর্ট: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বেলা শেষে দাবি দিয়ে তো আর লাভ নেই।আামদের সময় তো শেষ। ৫ বছর মেয়াদ আমাদের পূর্ণ হয়ে গেছে। প্রায় ১ মাসটাই তারপরে নির্বাচন।কাজেই আমাদের হাতে এখন আর এই ১৬ দফা দাবি বিবেচনার সময় নাই। তবে এর মধ্যে অনেকগুলো কিন্তু আমরা করে ফেলেছি। যদি বাংলাদেশের জনগণ আমাদেরকে ভোট দেয়। যদি আমরা নির্বাচিত হয়ে আবার সরকার গঠন করতে পারি।তখন হয়ত এই দাবিগুলো বিবেচনার সুযোগ পাব। চিকিৎসকদের দাবি করার আগেই কিন্তু অনেক কাজ আমরা আপনাদের জন্য করে দিয়েছি বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।
রোববার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবনে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) আয়োজিত ‘চিকিৎসক সম্মিলন-২০১৮’ তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের যারা সাধারণ মানুষ।যাদের বিদেশ যাওয়ার মতো সঙ্গতি নেই। তাদের চিকিৎসা সেবাটা নিশ্চিত করা সরকার হিসেবে আমাদের দায়িত্ব কর্তব্য।মানুষ হিসেবে এটি আমাদের দায়িত্ব কর্তব্য বলে মনে করি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনগণের সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। ক্ষমতাকে আমরা হাতে নিয়েছি জনগণের সেবা করার দায়িত্ব হিসেবে।
তিনি বলেন, চিকিৎসা শিক্ষাটা হচ্ছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কাজেই বিশেষায়িত শিক্ষা বহুমুখী চিকিৎসা সেভাবে নার্সিং ট্রেনিং এগুলো আমাদের জন্য প্রয়োজন দাবি করে শেখ হাসিনা বলেন, কারণ আমাদের যারা বিত্তশালী সম্পদশালী। তারা তো একটু হাঁচি-কাশি হলেও বিদেশে চলে যেতে পারে চিকিৎসার জন্য। কিন্তু সাধারণ মানুষ তো সেই সুযোগ পায় না। বড়লোক বিত্তবানরা যাক তাতে আমাদের সিট খালি থাকবে, সাধারণ মানুষ চান্স পাবে। আমার আপত্তি নাই। কিন্তু আমার দেশের মানুষ যারা মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্ত যাদের বিদেশ যাওয়ার মতো সঙ্গতি নেই। তাদের চিকিৎসা সেবাটা নিশ্চিত করা এটা সরকার হিসেবে আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য। মানুষ হিসেবে আমাদের দায়িত্ব বলে মনে করি।
আমরা আমাদের মানুষগুলোকে ট্রেনিং দিয়ে উপযুক্ত করে গড়ে তুলতে চাই’ উল্লেখ করে চিকিৎসকদের প্রতি অনুরোধ জানিয়ে বলেন, মানুষের সেবা করাটা কিন্তু সর্বপ্রথম কর্তব্য।আর এখন আমাদের স্যাটেলাইট নিজস্ব হয়ে গেছে।আমরা সারা দেশে ইন্টারনেট সার্ভিস চালু করে দিয়েছি। প্রায় ৯৯ ভাগ জেলায় এরইমধ্যে ব্রডব্যান্ড চালু হয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করে দিয়েছি। সব পথেরই কিন্তু উন্নয়ন করে দিচ্ছি। কাজেই এখন আর আমাদের কেবল রাজধানীতেই শুধু থাকতে হবে তা না, সারাবাংলাদেশেই আমাদের চিকিৎসা সেবাটা নিশ্চিত করতে হবে। সেইদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন বলে আমি আশা করি।
‘আমাদের প্রায় ১০ বছর সম্পন্ন হতে চলল। এ দশ বছরে একটানা এবং এর আগে ছিলাম ৫ বছর। বাংলাদেশের জনগণের সেবা, জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমরা আমাদের যথাসাধ্য চেষ্টা করেছি। ক্ষমতাকে আমরা হাতে নিয়েছি হাতে এই চিন্তা থেকে, এটা জনগণের সেবা করা কর্তব্য ও জনগণের সেবা করার আমার দায়িত্ব’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।কারণ এটা আমি সবসময় স্মরণ করি যে, এই দেশ আমার বাবা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। এদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তন করা এটাই ছিল তার একমাত্র চিন্তা। অনুষ্ঠানে বিএমএ’র পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে ক্রেস্ট উপহার দেওয়া হয়। প্রায় আট বছর পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারি বাসভবন গণভবনে চিকিৎসকদের এ মহাসম্মিলন অনুষ্ঠিত হয়। এতে রাজধানীসহ সারাদেশের বিএমএ’র সদস্যরা যোগদান করেন।
বিএমএ সভাপতি ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিনের সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন কনফেডারেশন ফর মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন ইন এশিয়া অ্যান্ড ওশেনিয়া (সিএমএএও)-এর সভাপতি রাভিন্দ্রান আর নাইডু, স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক, বিএমএ’র মহাসচিব ডা. এহতেশামুল হক চৌধুরী। স্বাগত বক্তব্য রাখেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ডা. কনক কান্তি বড়ুয়া।