spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

আবরার হত্যা: ঢাকায় টিউশন করে লেখাপড়া করতেন গ্রেফতার শামিম

spot_img

 

- Advertisement -

প্রিয় সংবাদ ডেস্ক:: টিউশন করে লেখাপড়ার খরচ চালাতেন মো. শামিম বিল্লাহ (২১)। তার পেছনে বাবার কোনো টাকা খরচ হয়নি। গ্রামের খুবই মেধাবী সরল সুবোধ বালকটিই যে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ‘আবরার হত্যা মামলার আসামি’ একথা ভাবতেই শিউরে উঠছেন অনেকে।

গ্রামবাসী বলছেন, নিরীহ প্রকৃতির ওই ছেলে তো কোনো দল করেননি। কোনো অসাধু সঙ্গেও দেখা যায়নি তাকে। ওদের পরিবারটিও নিরীহ প্রকৃতির। তাহলে কীভাবে এতোবড় একটি নৃশংস ঘটনায় জড়িয়ে পড়লো।

শুক্রবার বিকালে শ্যামনগর উপজেলায় তার খালার বাড়ি দেউলিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয় মো. শামিম বিল্লাহকে।

শামিম সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার ভুরুলিয়া ইউনিয়নের ইছাকুড় গ্রামের ট্রাকচালক আমিনুর রহমান ওরফে বাবলু সরদারের ছেলে ও বুয়েটের নেভাল অ্যান্ড আর্কিটেকচার বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। শামিম বিল্লাহ আবরার হত্যা মামলার ১৪ নম্বর আসামি।

এ বিষয়ে শামিম বিল্লাহর বাবা বাবলু সরদার জানান, ২০১৫ সালে এসএসসিতে গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছিল ছেলে।

২০১৭ সালে ঢাকার সেন্ট জোসেফস থেকেও গোল্ডেন এ প্লাস পেয়েছিল ছেলে।এর আগে অষ্টম শ্রেণিতে বৃত্তি লাভ এবং পঞ্চম শ্রেণি সমাপনীতেও সেরা ফলাফল করেছিল। তাকে লেখাপড়া করাতে আমার কোনো টাকা খরচ হয়নি।

তিনি বলেন, ছেলে ডাচ বাংলা ব্যাংক থেকে গরিব ও মেধাবী হিসাবে আর্থিক সহায়তা পেয়ে থাকে। ঢাকায় একজন সচিবের বাড়িতে টিউশন পড়ায়। সেখান থেকে যে টাকা ছেলে পায় তা নিজের খরচে লাগিয়েও বাড়িতে পাঠায়। এরই মধ্যে শামিম ল্যাপটপ, স্মার্টফোন সবই কিনেছে নিজের আয় করা টাকায়।

তার জমানো আড়াই লাখ টাকা দিয়ে সম্প্রতি একটি এফজেড মোটরসাইকেলও কিনেছে। এর রেজিস্ট্রেশন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। আবরার ফাহাদ যেদিন খুন হন সেদিন রাত ৯টার দিকে ২০০৪ নম্বর কক্ষের বাসিন্দা শামিম বিল্লাহ প্রাইভেট পড়িয়ে একটি নতুন হেলমেট কিনে শেরে বাংলা হলে ঢুকছিল।

সেখানে অনেকটা হাঙ্গামা দেখতে পায় শামিম। ওই মুহূর্তে তার বন্ধুরা তার হেলমেটেটি মাথায় পরে হাসি তামাসাও করে।

তিনি জানান, এর কিছুক্ষণ পর হলের বড় ভাইরা ওদের সবাইকে ডাকে। এমন ১০/১৫ জনের মধ্যে শামিম বিল্লাহও একজন। বড় ভাইরা কী সব পরামর্শ নাকি দিয়েছিল তাদের। এরপর শামিম রুমে চলে যায়।

বাবলু সরদার ছেলের বরাত দিয়ে আরও জানান, আবরার হত্যার পরদিনও শামিম বিল্লাহ হলে ছিল। কিন্তু দারোয়ান তাকে ডেকে বলে বাবা তুমি তো পাশের রুমে থাকো। এখন এখানে থাকা নিরাপদ নয়। এরপর শামিম ওঠে একজন সচিবের বাসায়। সেখান থেকে সরাসরি গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরায় চলে আসে। এর পর কোনো কিছু বুঝে উঠবার আগেই পুলিশ তাকে ধরে নিয়ে যায়।

শামিমের একমাত্র বোন শারমিন শ্যামনগর আতরজান মহিলা কলেজে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী। শামিমের মা হালিমা খাতুন বলেন, আমার ছেলে কারও সঙ্গে ঝগড়াও করেনি কোনোদিন। সবাই তাকে ভালো বলে। আমরা ওর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে চেয়ে আছি। কিন্তু এ কোন বিপদের মুখে পড়লো আমার সোনার ছেলেটি।

বাবা বাবলু সরদার জানান, আমি কিস্তিতে একটি ট্রাক কিনে সেটা চালাই। আমার ভাই লাভলু ঢাকা পরিবহনের চালক। আমার বাবা আতিয়ার রহমান একটি ইটভাটায় চাকরি করেন। সব মিলে আমার পরিবার স্বচ্ছলতার মুখ দেখছিল। এর মধ্য দিয়ে ছেলেটি লেখাপড়া শিখে বড় হচ্ছিল। কিন্তু মাঝখানে এ কী হলো।

তিনি বলেন, একজন বাবা হিসাবে আমি চাই যারা আবরারকে হত্যা করেছে তারা যেনো শাস্তি পায়। এমনকি আমার ছেলে দোষী হলে সেও শাস্তি পাক। কিন্তু নিরীহ নিরপরাধ কোনো ছেলে যেনো কোনোভাবেই ষড়যন্ত্রের শিকার না হয়।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ