সাতকানিয়ায় ইফতারসামগ্রহী বিতরণের সময় পদদলনে ১০ নারী-শিশু নিহতের ঘটনায় দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে আয়োজিত মানববন্ধনে শিশুদের ব্যাপকহারে ব্যবহার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার সকাল ১১ টার দিকে সাতকানিয়ার নলুয়ায় শুরু হওয়া এই মানববন্ধন ঘাটিয়াডাঙ্গাসহ আশপাশে কয়েক কিলোমিটার এলাকায় বিস্তৃত হয়ে ১ টার দিকে শেষ হয়। সাতকানিয়ার সর্বস্তরের মানুষের ব্যানারে আয়োজনের কথা বলে মানববন্ধনে নারীদের পাশাপাশি শত শত শিশুকে ব্যবহার করা হয়। ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকতে গিয়ে সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হয় মানববন্ধনে অংশগ্রহণকারী শিশুদের। বৃষ্টিতে ভিজতেও দেখা যায় তাদেরকে। এসময় ‘শাহজাহান সাহেবের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার কর’, ‘শাহজাহান সাহেবের বিরুদ্ধে মামলা চাই না’, ‘শাহজাহান সাহেবর সম্মান ক্ষুণ্ন হতে দেব না’, ‘এলাকাবাসীর সর্বনাশ করবেন না’সহ নানা স্লোগান সম্বলিত প্লেকার্ড বহন করতে দেখা যায় শিশুদের।
বৃহস্পতিবার সকালে জেলা প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটি ঘটনাস্থল পরিদর্শনে করেছে। মূলত তদন্ত কমিটির উপস্থিতি সামনে রেখে শোডাউন প্রদর্শন করতেই নলুয়া ইউনিয়নের বাড়িঘর থেকে গণহারে নারী-শিশুদের সকাল থেকে মানববন্ধনে জড়ো করা হয়।
এদিকে ১০ নারী-শিশু মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রধান চট্টগ্রামের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মাকসুদুল করিমসহ ৩ জন বৃহস্পতিবার সকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তারা স্থানীয় লোকজন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এখনই তারা এ নিয়ে কিছু বলতে রাজি নন। তবে কয়েকদিনের মধ্যে জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত প্রতিবেদন জমা দেবেন বলে জানান এডিসি মাসুদুল কবির।
অবহেলাজনিত মৃত্যুর অভিযোগ এনে মঙ্গলবার সকালে সাতকানিয়া থানায় খাগরিয়া ইউনিয়নের বাসিন্দা নিহত হাসিনা আক্তারের স্বামী মোহাম্মদ ইসলাম বাদি হয়ে মামলাটি করেছেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে কেএসআরএমের মালিক মোহাম্মদ শাহজাহানকে। ফৌজদারি কার্যবিধির ৩০৪-এর ক ধারায় মামলা করা হয়। মঙ্গলবার ঘটনাস্থলের আশপাশ থেকে ৪ জন গ্রেফতার করা হয়। বুধবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া পর্যন্ত আদালত তাদেরকে জামিন দেন।
এর আগে গত সোমবার সাতকানিয়ার নলুয়া ইউনিয়নের পূর্ব গাটিয়াডেঙ্গা এলাকার কাদেরীয়া মুঈনুল উলুম দাখিল মাদ্রাসার মাঠে কেএসআরএমের মালিকের পক্ষ থেকে ইফতার সামগ্রী বিতরণের সময় ভিড়ের চাপে ১০জন নারী ও শিশু নিহত হয়। এই ঘটনায় মোট ২০ জন আহত হন।সূত্র: একুশে পত্রিকা