spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

দাফনে বাধা, বাবার লাশ নিয়ে রাস্তায় ঘুরছেন ছেলে

spot_img

 

- Advertisement -

প্রিয় সংবাদ ডেস্ক :: শ্বাসকষ্টে বৃদ্ধ বাবা আবদুল হাইয়ের (৬৫) মৃত্যু হয়েছে। এলাকায় জমিসংক্রান্ত বিরোধ ও করোনাভাইরাস সন্দেহে মরদেহ দাফনে বাধা দেয়া হচ্ছে। এ অবস্থায় বাবার মরদেহ ভ্যানে নিয়ে রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন ছেলে শাহজাহান মিয়া (২৮)।

সোমবার দিবাগত রাতে এমন দৃশ্য দেখা গেল ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলার ২নং ইউনিয়নের সাতুতী গ্রামে।

জানা যায়, গার্মেন্টকর্মী শাহজাহান মিয়া ময়মনসিংহের ভালুকা উপজেলার স্বয়ার মাস্টারবাড়ি এলাকায় বাবা আবদুল হাইকে সঙ্গে নিয়ে থাকতেন। দীর্ঘদিন ধরে বাবার শ্বাসকষ্ট।

সোমবার সকালে বাবাকে নিয়ে তিনি গৌরীপুর উপজেলার সাতুতী গ্রামে নিজ বাড়িতে ফেরেন। এর পর আবদুল হাইয়ের শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটে।

চিকিৎসার জন্য বাবাকে নিয়ে যান ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে বাড়ি ফেরার পথে রাত ৯টার দিকে মারা যান বাবা।

অ্যাম্বুলেন্সে বাবার মরদেহ নিয়ে বাড়িতে ফিরলে দাফনে বাধা দেন আবদুল হাইয়ের ভাইয়ের ছেলে ও স্বজনরা। জমিসংক্রান্ত বিরোধ থাকার কারণে বাবার মরদেহ বাড়িতে নামাতে দেয়নি বলে অভিযোগ করেন শাহজাহান মিয়া।

ছেলে শাহজাহান মিয়ার অভিযোগ, বাবার মরদেহ নামাতে চাইলে তার চাচাতো ভাই রিপন, সাইফুল ইসলাম, রবিউল ইসলাম, ফারুক মিয়া, রফিক মিয়া গং তাকেও মারপিট করেছেন।

মৃত আবদুল হাইয়ের স্ত্রী ফিরুজা খাতুন জানান, ওরা আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। এ সময় তিনি বলেন ‘আমরা নাকি তাকে (আবদুল হাই) মেরে ফেলেছি। এই কথা বলে আমাদের ওপর হামলা করেছে। এর পর শাহজাহান বাবার মরদেহ নিয়ে চলে যান তাঁতকুড়া এলাকায়।

সেখানে একটি ভ্যানে বাবার মরদেহ নিয়ে দাফনের চেষ্টা করেন কোনাপাড়ায় এক আত্মীয়ের বাড়িতে। সেখানেও দাফনে জটিলতা সৃষ্টি হয়। করোনাভাইরাসে মারা গেছে এমন গুঞ্জনও ছড়িয়ে যায়। ফলে সেখানেও দাফন সম্ভব হয়নি।

ভ্যানে বাবার মরদেহ নিয়ে সেখান থেকেও চলে আসতে হয়। গৌরীপুর বাজারের রাস্তায় এদিক-সেদিক ছোটাছুটির সময় রাত ২টার দিকে বিষয়টি জানতে পারেন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ‘এসো গৌরীপুর গড়ি’ সমন্বয়কারী আবদুল কাউছার চৌধুরী রন্টি।

ফেসবুকে লাইফে বিষয়টি নজরে আসে এ সংগঠনের স্বেচ্ছাসেবক শেখ বিপ্লবের। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান গৌরীপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার সেঁজুতি ধর।

গৌরীপুর থানার ওসি মো. বোরহান উদ্দিন জানান, পারিবারিক ও জমিসংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে। সে কারণে দাফন নিয়ে জটিলতা সৃষ্টি হয়েছিল। পৌর কাউন্সিলর আতাউর রহমান আতার উপস্থিতিতে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়েছে। ফজরের নামাজের পর মঙ্গলবার ভোরে দাফনকাজ সম্পন্ন হয়।

এসো গৌরীপুর গড়ি সমন্বয়কারী আবদুল কাউছার চৌধুরী রন্টি জানান, সংগঠনের পক্ষ থেকে দাফনের কাপড় ও অন্যান্য সরঞ্জাম আনা হয়েছে। পৌরসভার পশ্চিম দাপুনিয়ার গোরস্তানে দাফন হয়।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ