spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

চট্টগ্রামের লাইফ লাইনের অবস্থা নাজুক

spot_img

 

- Advertisement -

মো.মুক্তার হোসেন বাবু :: চট্টগ্রাম বন্দরের আমদানি-রপ্তানির পণ্য পরিবহনের অন্যতম সড়ক পোর্ট কানেক্টিং সড়কের বেহাল দশায় দুর্ভোগের সীমা নেই গাড়ি চালকদের। একই সাথে চট্টগ্রাম নগরীর লাইফ লাইন বলে পরিচিত এই সড়কে কয়েক লাখ মানুষকে প্রতিদিন নরক যন্ত্রণা পোহাতে হচ্ছে। বন্দরের আমদানি-রপ্তানির পণ্য পরিবহনের অন্যতম সড়ক হওয়ায় এ অবস্থায় ক্ষতির মুখেও পড়তে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। গতকাল শুক্রবার সরেজমিনে স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, একটু বৃষ্টি হলেই পানি নামতে পারে না। আর দোকানপাট ময়লা পানিতে ডুবে যায়।
এর আগে গত ৬ আগষ্ট দায়িত্ব গ্রহনের পর পরই পোর্ট কানেকটিং সড়কের সাগরিকা হতে নয়াবাজার মোড় পর্যন্ত উন্নয়নকাজ পরিদর্শনকালে চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক আলহাজ্ব মোহাম্মদ খোরশেদ আলম সুজন বলেছিলেন, চট্টগ্রাম নগরীতে পোর্ট কানেকটিং সড়কটি অত্যন্ত জনগুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু দীর্ঘসুত্রিতায় নিমজ্জিত হয়ে বছরের পর বছর এই সড়কের উন্নয়নকাজ সম্পন্ন হয়নি। যা অত্যন্ত দু:খ জনক। এই সড়কে আগামী ৫ দিনের মধ্যে রাস্তায় যত গর্ত রয়েছে তা ভরাট করে যান চলাচলের উপযোগী ও আগামী নভেম্বর মাসের মধ্যে অবশ্যই কাজ সম্পাদনের কড়া নির্দেশনা দেন প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন। কিন্তু ৫ দিনের স্থলে গতকাল শুক্রবার পর্যন্ত ১১ দিন অতিবাহিত হলেও যান চলাচলে তেমন উপযুক্ত হয়নি। এদিকে সড়কটির বেহাল অবস্থায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মাহবুবুল আলম। তবে ঠিকাদারদের গাফিলতির কথা উল্লেখ করে নভেম্বরের মধ্যেই সড়কটির কাজ শেষ করার আশ্বাস দেন চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক খোরশেদ আলম সুজন।
তিনি জানান, বন্দরের সঙ্গে সংযুক্ত পোর্ট কানেক্টিং সড়ক হলো দেশের লাইফলাইন। এই সড়ক কয়েক বছর ধরে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে আছে। তাই এটিকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। নভেম্বরের মধ্যে সড়কটির কাজ শেষ করা হবে। এর পাশাপাশি মাঝিরঘাট সড়কের কাজও আমি পরিদর্শন করেছি। বন্দরের মালামাল পরিবহনের অতি গুরুত্বপূর্ণ নগরীর সদরঘাট থেকে বারিক বিল্ডিং মোড় পর্যন্ত চট্টগ্রামের স্ট্যান্ড রোডটির অবস্থাও করুণ।


চসিক সূত্রে জানা গেছে, চার প্রতিষ্ঠান পৃথক লটে ৫ দশমিক ৬৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে পোর্ট কানেক্টিং সড়কটির উন্নয়ন কাজ করছে। কিন্তু বছরের পর বছর পার হলেও সংস্কার কাজ শেষ হয়নি। জাপানের দাতা সংস্থা জাইকার অর্থায়নে এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সিটি গভর্নেন্স প্রকল্পের আওতায় প্রকল্প ব্যয় হচ্ছে ১৬৮ কোটি টাকা। এছাড়া চট্টগ্রামের বেশির ভাগ সড়কেরও বর্ষায় বেহাল অবস্থা । বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়ে পানি জমে আছে প্রতিটি সড়কে। বর্ষার শুরুতেই কয়েকদিনের বর্ষণে এম বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয়। নগরীর এক্সেস রোড, পোর্ট কানেকটিং সড়ক, বহদ্দারহাট, ঈদগাহ, চকবাজার সহ প্রতিটি সড়কে খানাখন্দকের সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙা-চোরা সড়ক আর বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে পানি জমে থাকায় চলাফেরা করতে চরম বেকায়দায় পড়তে হচ্ছে মানুষজনকে। তদারকি ছাড়াই সড়কগুলো তৈরির কারণে প্রতি বর্ষায় এ বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হয় বলে অভিযোগ নগর পরিকল্পনাবিদদের। সড়কগুলো তৈরি করার সময় মান নিয়ন্ত্রণ না করার কারণে বর্ষা আসলেই এ দুরবস্থার সৃষ্টি হয় বলে অভিমত নগর পরিকল্পনাবিদ আশিক ইমরানের। তবে, ভাঙা সড়ক দ্রæত মেরামতের আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসক।
সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী লে. কর্নেল সোহেল আহমদ বলেন, চলমান বর্ষায় কত কিলোমিটার সড়ক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তার হিসাব এখনো করা হয়নি। করোনার কারণে প্রায় তিন মাস এবং বৃষ্টির কারণে সংস্কার কাজ করতে না পারায় সড়কে ক্ষতি হয়েছে বেশি। যেসব সড়কে বড় বড় গর্ত হয়েছে সেখানে জরুরি সংস্কার কাজ চলছে।
জানা গেছে, চার বছরেও চট্টগ্রামবাসীর দুঃখ হয়ে থাকা পোর্ট কানেক্টিং সড়কের উন্নয়ন কাজ শেষ হয়নি। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লাগোয়া এই সড়কটি দিয়ে বন্দর থেকে প্রতিদিন অন্তত ১০ হাজার পণ্যবাহী গাড়ি সারাদেশে যাতায়াত করে। এছাড়া এই সড়ক দিয়ে আশপাশের বিভিন্ন জেলায় যাতায়াত করে কয়েক লাখ মানুষ। এমন একটি গুরুত্বপূর্ণ সড়কে চলাচল করতে গিয়ে নরক যন্ত্রণা পোহাতে হচ্ছে নগরবাসীকে। দুরবস্থার কারণে চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে গাড়ী চালকদেরও। পুরো সড়ক জুড়েই বড় বড় গর্ত। বৃষ্টির সময় গর্তে পানি জমে থাকলে চলাচলে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয় এলাকার সাধারণ মানুষকে। সড়কের বেহাল অবস্থায় লোকসানের মুখে পোর্ট কানেক্টিং এলাকার ব্যবসায়ীরাও।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ