ঈদুল ফিতরের আগেই বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি এবং তার পছন্দানুযায়ী বিশেষায়িত ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি ও সুচিকিৎসার দাবি জানিয়েছে বিএনপি।
সোমবার(১১জুন) রাজধানীর নয়াপল্টনস্থ দলটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এক সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি’র সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব এ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এ দাবী জানান।
তিনি বলেন, ঈদুল ফিতরের আগেই বিএনপি চেয়ারপার্সন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নি:শর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে আগামী ১৪ জুন ২০১৮, বৃহস্পতিবার সারাদেশে জেলা প্রশাসকের নিকট স্মারকলিপি প্রদান করবে জেলা বিএনপি।
রিজভী বলেন, ইউনাইটেড হাসপাতালে উন্নতমানের চিকিৎসার দাবি উপেক্ষা করে সরকার তাঁকে পিজি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার কথা বলে চলেছে। সেখানে সব দলবাজ চিকিৎসক। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদেরকে তো আগেই সেখান থেকে চাকুরীচ্যুত করে বিদায় দিয়ে দেয়া হয়েছে। আওয়ামী লীগের দলবাজ চিকিৎসকদের দ্বারা বেগম জিয়ার যথাযথ চিকিৎসা হবে না, কেননা তাদের ওপর বেগম জিয়া এবং দেশের মানুষের কোন আস্থা নেই। তার পরেও সরকার জবরদস্তিমূলকভাবে বেগম জিয়াকে পিজি হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়ার কথা বলা দূরভিসন্ধিমূলক, সুপরিকল্পিত চক্রান্ত।
তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া পিজি হাসপাতালে চিকিৎসা নিরাপদ মনে করেন না বলেই তিনি সেখানে চিকিৎসা নিতে চাচ্ছেন না। তার জীবন বিপন্ন করার গভীর ষড়যন্ত্রে মেতেছে সরকার। এক অমানবিক প্রতিহিংসার শিকার বেগম জিয়া এখন গুরুতর অসুস্থতা নিয়ে বিধ্বস্ত, অবাসযোগ্য, অন্ধকার গুহার ন্যায় একটি কক্ষের মধ্যে বন্দী। তিনি চিকিৎসাবঞ্চিত, তাঁর মানবাধিকার লঙ্ঘিত, বেঁচে থাকার অধিকার অপহৃত।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছিলেন যে, বেগম জিয়ার সুগার লেভেল কমে গিয়েছিল। যদি তার কথাই ঠিক হয় তাহলে তো সুগার লেভেল কমে যাওয়াও তো বিপজ্জনক। কিন্তু বাস্তবে উনি টিআইএ-তে আক্রান্ত হয়ে জ্ঞান হারিয়েছিলেন-যা তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা অবহিত করেছেন। চিকিৎসকগণ বেগম জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষাসহ তাৎক্ষণিক ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তির সুপারিশ করেছিলেন। দেশনেত্রীর জ্ঞান হারানোর মতো এতবড় একটি দু:সংবাদের পরেও কারা কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া তো দুরের কথা, বরং দিনের পর দিন সময় ক্ষেপণ করে দেশনেত্রীর অসুস্থতাকে আশঙ্কাজনক মাত্রায় নিয়ে যেতে চাচ্ছে। কারণ তাঁর ব্যক্তিগত চিকিৎসকরা তাঁর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে এসে বলেছিলেন, তাৎক্ষণিক চিকিৎসা না দিয়ে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর খারাপের যেতে পারে।
তিনি বলেন, গুরুতর অসুস্থ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে যে তাচ্ছিল্য ও অবহেলা চলছে তাতে গভীর আশঙ্কা হয় সরকার বেগম জিয়াকে দুনিয়া থেকে সরিয়ে দেয়ার মহাচক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে। দেশের জনগণ বেগম খালেদা জিয়ার অসুস্থতা নিয়ে চরম উৎকন্ঠিত। বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সরকারী নোংরা চাতুরীটা রীতিমত উদ্বেগ, ভয় ও বিপদের অশুভ সংকেত।