কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ীতে প্রেমের ফাঁদে ফেলে নবম শ্রেণীর এক মাদ্রাসার শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে থানায় নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। শুক্রবার সকালে ওই শিক্ষার্থীকে মেডিকেল পরীক্ষা করার জন্য কুড়িগ্রাম আদালতে নেয়া হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার নাওডাঙ্গা ইউনিয়নের গোরকমন্ডপ এলাকায়। শিক্ষক কর্তৃক মাদ্রাসা শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের ঘটনায় ঐ এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চ্যল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার সকালে শতাধিক এলাকাবাসী গোরকমন্ডল স্কুলে গিয়ে সহকারী শিক্ষক মোতালেব মিয়া ও মকবুল হোসেনের বদলীর বাদী জানান।
ঐ শিক্ষার্থীর বাড়ী উপজেলার গোরুকমন্ডপ এলাকায়। তিনি ওই এলাকার আনোয়ারুল হকের মেয়ে । অন্য দিকে ঐ সহকারী শিক্ষকের বাড়ী একই ইউনিয়নের নাওডাঙ্গা এলাকায়। তিনি ঐ এলাকার মৃত চাঁদ মিয়ার ছেলে ও গোরকমন্ডল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক। তিনি দুই সন্তানের জনক বলে জানা গেছে।
গোরকমন্ডল এলাকার বাসিন্দা নুর হোসেন, জান্টু মিয়া ও মোশারফ হোসেন জানান, গোরকমন্ডল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোতালেব মিয়ার সাথে বালারহাট ডি এস দাখিল মাদ্রাসার নবম শ্রেনীর এক শিক্ষার্থীর প্রেমের সর্ম্পক গড়ে উঠে। এক পর্যায়ে ঐ মাদ্রাসা শিক্ষর্থীকে বিয়ের প্রলোভনে একাধিকবার উভয়ের মধ্যে শারীলিক মিলনে জড়িয়ে যান। তাদের প্রেমের সর্ম্পক গোপন থাকলেও ক্রমান্বয় ছড়িয়ে পড়ায় বিয়ের চাপ দেন ওই শিক্ষার্থী। উপান্তর না পেয়ে ওই শিক্ষকের লোকজন বুধবার রাতে মেয়ের বাড়ীতে শালিশী বৈঠকে সমাধানের চেষ্টা চালান। পরে বৈঠকে সমাধানের চেষ্টা ব্যর্থ হলে শিক্ষার্থীর বাবা বৃহস্পতিবার রাতে বাদী হয়ে ফুলবাড়ী থানায় নারী-শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেন। আমরা ওই সহকারী শিক্ষকের শাস্তির দাবী জানাচ্ছি।
ওই এলাকার সাবেক সংরক্ষিত মহিলা সদস্য পারভীন বেগম জানান, মেয়েটিকে ধর্ষণ করায় তার বাবা ফুলবাড়ী থানায় একটি ধর্ষন মামলা দায়ের করেছে এবং মেয়েটি যেন সঠিক বিচার পান। সেই সাথে অপরাধীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বাদী জানান।
ওই এলাকার দফাদার আব্দুল কমির জানান, মেয়েটির সরলতার সুযোগ নিয়ে ওই সহকারী শিক্ষক মোতালেব মিয়ার প্রেমের ফাঁদে ফেলে নির্যাতন করতেন। বিষয়টি জানাজানি হলে একটি প্রভাব শালি মহল সমাধানের চেষ্টা করলেও শেষ পর্যন্ত পারেনি। পরে মেয়ের বাবা মাষ্টারের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন।
ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী জানান, এঘটনায় কোন লিখিত অভিযোগ পাইনি। তবে সহকারী শিক্ষক মোতালেব মিয়া অসুস্থ থাকায় তিনি ২৪ তারিখ মেডিকেল ছুটি নিয়েছে। তারপরেও বিষয়টি উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।
উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার আশরাফুজ্জামান জানান, বিষয়টি শুনেছি। তার বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর ঘটনা হলে আইনাগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
ফুলবাড়ী থানার অফিসার ইনর্চাজ (ওসি) ফজলুর রহমান জানান,শিক্ষার্থীর বাবা বাদী হয়ে বৃহস্পতিবার রাতে নারী শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দায়ের করেছেন। মেয়েটিকে মেডিকেল পরীক্ষা করার জন্য শুক্রবার সকালে কুড়িগ্রাম আদালতে পাঠানো হয়েছে। সেই সাথে আসামীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।
বিএম/পিএস