সিলেট জেলা-মহানগর যুবদলের সম্মেলন ও কাউন্সিল শনিবার

দীর্ঘ ৩ বছর পর অনুষ্ঠিত হচ্ছে সিলেট জেলা যুবদলের সম্মেলন ও কাউন্সিল।

- Advertisement -

শনিবার (১০ সেপ্টেম্বর) সিলেট জেলা যুবদলের কাউন্সিল নগরের রেজিস্টারি মাঠে এবং মহানগর যুবদলের কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে কেন্দ্রীয় মুসলিম সাহিত্য সংসদের শহীদ সুলেমান হলে।

সম্মেলনে প্রধান অতিথি বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস, উদ্বোধক হিসেবে উপস্থিত থাকছেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু, প্রধান বক্তা যুবদলের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোনায়েম মুন্না, বিশেষ বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন-যুবদলের কেন্দ্রীয় সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন হাসান।

সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা। সরাসরি ভোটে নেতৃত্ব নির্বাচন করা নিয়ে প্রার্থীরা কাউন্সিলরদের মন মজানোর চেষ্টা করছেন, এমনটি জানা গেছে সংগঠন সূত্রে।

এবার সরাসরি ভোটে নির্বাচিত নতুন নেতৃত্ব সিলেটে সংগঠনকে আরো শক্তিশালী ও সংগঠিত করে দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার আন্দোলনে বৃহত্তর অবদান রাখবে আশা প্রকাশ করেছেন দলের নেতাকর্মীরা।

তবে দীর্ঘদিন থেকে সম্মেলন না হওয়া এবং মামলা-নির্যাতনে অনেক নেতাকর্মী বিদেশে পাড়ি দিয়েছেন। অনেকে রাজনীতি ছেড়ে জীবন জীবিকার তাগিদে যুক্ত হয়েছেন বিভিন্ন পেশায়।

দলীয় সূত্র জানিয়েছে, ২০১৯ সালে জেলা যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়। সময় পেরিয়ে গেলেও পূর্ণাঙ্গ কমিটি হয়নি। সম্প্রতি সরকার বিরোধী আন্দোলনের গতি বৃদ্ধি পেতে থাকলে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড কিছুটা জোরদার হয়েছে। এ অবস্থায় পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনে তোড়জোড় চলছিলো। এর মধ্যে সম্মেলন ও কাউন্সিলের ঘোষণা আসে। এরপর পাল্টে যেতে থাকে সব হিসাব নিকাশ। সম্মেলনে জেলা যুবদলের সভাপতি ও সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ছয় জন।

সভাপতি পদে প্রতিদ্বন্দ্বীরা হলেন- জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি সাঈদ আহমদ, মহানগর বিএনপির সাবেক সহ-আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম মোমিন ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি শাহেদ আহমদ চমন। আর সাধারণ সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা রয়েছেন জেলা ছাত্রদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মকসুদ আহমদ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান নেসার ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি লিটন আহমদ।

আহ্বায়ক কমিটি নিয়ে মান-অভিমান ক্ষোভ-বিক্ষোভ থাকলেও কাউন্সিল ঘোষণার পর শুরু হয় প্রার্থীদের দৌড়ঝাঁপ। সাধারণ নির্বাচনের মতো সবাই কাউন্সিলদের কাছে নিজেদের আন্দোলনে সংগ্রামে ত্যাগ ও ভবিষ্যৎ সংকল্প তুলে ধরছেন। ফলে কর্মীরাও এখন অনেক উজ্জীবিত। আগামী দিনে যারা দলকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন-এমন নেতৃত্বের প্রত্যাশা সকলের।

সাবেক ছাত্রনেতাদের অনেকে জানান, দীর্ঘদিন পরে কাউন্সিল হচ্ছে। অনেকেই যুবদলের কমিটির অপেক্ষায় থাকতে থাকতে দলীয় কর্মকাণ্ড থেকে সরে গেছেন। অনেকে অন্য পেশায় চলে গেছেন। এছাড়া সরকারের নির্যাতন হামলা মামলায় অনেকেই দেশ ছেড়ে বিদেশে অবস্থান করছেন। তবে কাউন্সিলের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরি হবে বলে আশা করেন তারা।

জেলা যুবদলের আহ্বায়ক সিদ্দিকুর রহমান পাপলু বলেন, সম্মেলনের সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সম্মেলনে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস ছাড়াও উদ্বোধক হিসেবে থাকবেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য রাখবেন। নির্বাচনে ৫৮৭ জন কাউন্সিলর জেলা যুবদলের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন। আর কাউন্সিলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন কেন্দ্রীয় যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন হাস।

দলীয় সূত্র জানায়, কাউন্সিলে ভোট প্রদানের বুথে মোবাইল ফোনসহ কোনো ধরনের ইলেকট্রনিক ডিভাইস নেওয়া যাবে না।

একাধিক যুবদল নেতারা জানান, ভোট দেওয়া নিয়ে কাউন্সিলরদের ওপর নেতাদের নানা চাপ থাকে। কাকে ভোট দিয়েছেন, ছবি তুলেও দেখাতে হয়। এতে কাউন্সিলররা নেতার চাওয়ার বাইরের কাউকে ভোট দিতে পারেন না। এ ঘটনার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে সেজন্য বুথে মোবাইল ফোন বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক ডিভাইস নিষিদ্ধ প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যাতে কাউন্সিলররা ইচ্ছেমতো যে কাউকে ভোট দিতে পারেন।

জানা গেছে, জেলার সম্মেলনে প্রধান অতিথি হিসেবে থাকবেন বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সাবেক মন্ত্রী মির্জা আব্বাস। উদ্বোধক হিসেবে থাকবেন যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু। মহানগর যুবদলের সম্মেলনও কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাহ উদ্দিন টুকু উদ্বোধন করবেন। প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল। এছাড়া বিএনপি ও যুবদলের অন্যান্য নেতারাও থাকবেন। দু’টি পৃথক অধিবেশনে সম্মেলনের মাধ্যমে শেষ হবে।

২০১৯ সালের ১ নভেম্বর জেলা ও মহানগর যুবদলের আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্র। জেলায় ২৯ সদস্যবিশিষ্ট এবং মহানগরে ২৭ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি দেওয়া হয়।

সর্বশেষ