spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্য হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধিতে নির্মিত হবে পতেঙ্গা-হালিশহর সমুদ্র উপকূলে প্রায় আড়াই হাজার একর ভূমিতে বে-টার্মিনাল

spot_img

ছবি-৪
মো.মুক্তার হোসেন বাবু : বন্দর কর্তৃপক্ষ পণ্য হ্যান্ডলিং সক্ষমতা বৃদ্ধি করতে নগরীর পতেঙ্গা-হালিশহর সমুদ্র উপকূলে প্রায় আড়াই হাজার একর ভূমিতে বে-টার্মিনাল নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে। এদিকে ভূমি মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনায় চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনাল প্রকল্পের জন্য ৫শ দশমিক ৭১ একর সরকারি খাস জমির দলিল চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন।

- Advertisement -

বন্দর সূত্রে জানা গেছে, প্রস্তাবিত বে-টার্মিনাল হবে চট্টগ্রাম বন্দরের বর্তমান অবকাঠামোর চেয়েও বড়। চট্টগ্রাম বন্দর বছরে যে পরিমাণ পণ্য হ্যান্ডলিং করতে পারে, শুধু বে-টার্মিনালেই হ্যান্ডলিং করা যাবে তার কয়েকগুণ বেশি। বে-টার্মিনাল প্রকল্পের আওতায় তিনটি টার্মিনাল নির্মিত হবে। এরমধ্যে একটি নির্মাণ ও পরিচালনা করবে বন্দর কর্তৃপক্ষ। বাকি দুটি টার্মিনাল পিপিপি ভিত্তিতে বিদেশি বিনিয়োগে নির্মাণ করা হবে। এরইমধ্যে দুটি টার্মিনাল নির্মাণ ও পরিচালনার জন্য দুবাইভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ড ও সিঙ্গাপুর ভিত্তিক পোর্ট অব সিঙ্গাপুর অথরিটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের আলাপ-আলোচনা চলছে বলে জানা গেছে।

জানা গেছে, গত ৩১ জানুয়ারি ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে বে টার্মিনালের জন্য ৫শ দশমিক ৭১ একর সরকারি খাস জমি ৩ কোটি ৩ টাকায় বন্দর কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য চিঠি পাঠায়। তারই প্রেক্ষিতে গত ৩০ এপ্রিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন থেকে বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দিয়ে ওই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়। পরবর্তী মে মাসের প্রথম সপ্তাহে ওই টাকা জমা দেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। সদ্য বদলি হওয়া চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামানের গত ২০ আগস্ট তারিখের স্বাক্ষরিত ওই জমির দলিল পাঠানো হয় চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে।

এর আগে গত বছরের জুলাইয়ে সেই ৫০০ একর খাস জমির মূল্য পুনঃনির্ধারণ করেছিল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। তাদের হিসেবে ওই জমির মূল্য ১ হাজার ২৪১ কোটি টাকা নির্ধারণ করে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠায় জেলা প্রশাসন। এই ৫০০ একরের মধ্যে রয়েছে পতেঙ্গা, আগ্রাবাদ ও কাট্টলী সার্কেলের জায়গা। তবে ওই জমি প্রতীকীমূল্যে পেতে চট্টগ্রাম বন্দরের করা আবেদন ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে যায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে। প্রধানমন্ত্রীর সেই জায়গা নামমাত্র মূল্যে বন্দর কর্তৃপক্ষকে দিতে নির্দেশনা দিয়েছিল।

বর্তমানে ওই জায়গা চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের নামে রেজিস্ট্রির জন্য ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসে রয়েছে। আজ রোববার ওই বন্দোবস্তি জমির রেজিস্ট্রি ফি নির্ধারণ করে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেওয়া হবে। সেই সরকারি ফি জমা হলে ওই জমি চট্টগ্রাম বন্দরের নামে রেজিস্ট্রি হয়ে যাবে।

বন্দর সূত্রে আরো জানা গেছে, ২০২১ সালে ৬৬ দশমিক ৮৫ একর ব্যক্তি মালিকানাধীন ভূমি বন্দরকে বুঝিয়ে দেয় চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। এ ভূমির অধিগ্রহণ মূল্য ছিল প্রায় ৪০০ কোটি টাকা। এরপর বন্দর বাকি প্রায় ৮০৩ একর সরকারি খাস জমি প্রতীকী মূল্যে পাওয়ার চেষ্টা শুরু করে। ২০২১ সালের জুন মাসে ভূমি মন্ত্রণালয় এই জমি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তরের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেয়। কিন্তু চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে জমি বাবদ প্রায় ৩ হাজার ৬০০ কোটি টাকা পরিশোধ করতে বন্দর কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হয়। সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বন্দরের পক্ষ থেকে নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়কে এতো টাকা দেওয়ার সামর্থ্য বন্দরের নেই বলে জানানো হয়। এদিকে সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষের সঙ্গে আলোচনার পর প্রতীকী মূল্যে খাস জমি বন্দোবস্তের চেষ্টা চালিয়ে যায় বন্দর। সেটি শেষ পর্যন্ত বন্দরের পক্ষেই যায়।

এদিকে ৮০৩ একর ভূমির মধ্যে কিছু জমি বন বিভাগের অধীনে ছিল বলে তাতে আপত্তি দেয় বন বিভাগ। আর কিছু জমি বিভিন্ন সময় বিভিন্ন ব্যক্তিকে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বলে দাবি ওঠে। জটিলতা কাটাতে জেলা প্রশাসন তিন শ্রেণির জমিকে আলাদা করে বন্দোবস্ত দিতে ভূমি মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়। প্রস্তাবনা অনুযায়ী, ৫০০ একর নিষ্কণ্টক খাস জমির জন্য একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়। বন বিভাগের ২৮৭ একর জমির জটিলতা নিরসন করতে পাঠানো হয় আরও একটি প্রস্তাব।

spot_imgspot_img
spot_imgspot_img

সর্বশেষ