ভারত ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করায় এখন আকাশপথে পণ্য রপ্তানিতে নিজস্ব সক্ষমতা বাড়ানো দিকে গুরুত্ব দিচ্ছে বাংলাদেশ। বিষয়টি নিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার জোরালোভাবে কাজ শুরু করেছে।
আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন বলেন, ‘শুধু বাণিজ্য নয়, যোগাযোগব্যবস্থার দিকটিও জোরদার করা হচ্ছে। কিছু অবকাঠামোগত উন্নয়ন দরকার, আবার কিছু ক্ষেত্রে খরচও বেড়ে যাবে—এ বিষয়গুলো আমরা খতিয়ে দেখছি। আশা করছি, খুব দ্রুতই এর সমাধান বের করতে পারব।’
বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, ‘গতকালই বিভিন্ন খাতের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করেছি, যেখানে ক্রেতারাও উপস্থিত ছিলেন। তাঁদের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর আমাদের অবস্থান স্পষ্ট—আমরা আমাদের বাণিজ্যিক সক্ষমতা বাড়াব। রপ্তানি প্রতিযোগিতায় নিজেদের কোনো ঘাটতি রাখতে চাই না।’
ভারত হঠাৎ করেই বাংলাদেশের জন্য চালু থাকা ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করলেও এতে বড় কোনো সমস্যা হবে না বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘দেশের বাণিজ্যে যাতে কোনো প্রভাব না পড়ে, সে বিষয়ে সরকার ইতিমধ্যেই প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিচ্ছে। আমরা আমাদের নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় এ সংকট কাটিয়ে উঠতে পারব।’
ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল করায় ভারতকে আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো চিঠি দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এ মুহূর্তে এ ধরনের কিছু বিবেচনায় নেই।’
২০২০ সালের ২৯ জুন ভারত তাদের সেন্ট্রাল বোর্ড অব ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্যান্ড কাস্টমসের (সিবিআইসি) মাধ্যমে একটি আদেশ জারি করে বাংলাদেশের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা চালু করে। এ সুবিধার আওতায় বাংলাদেশ ভারতের বিমানবন্দর ব্যবহার করে তৃতীয় দেশে কার্গো পাঠাতে পারত। কিন্তু হঠাৎ করে ৮ এপ্রিল সিবিআইসি এক প্রজ্ঞাপনে বাংলাদেশকে দেওয়া ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা বাতিল করে। এতে বিপাকে পড়েন বাংলাদেশি রপ্তানিকারকেরা। তৃতীয় দেশে রপ্তানির উদ্দেশ্যে ভারতে প্রবেশের জন্য আসা গার্মেন্টস পণ্যবাহী ট্রাক বেনাপোল বন্দর থেকে ফেরত পাঠানো হচ্ছে।
বেনাপোল বন্দর সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বেনাপোল বন্দর থেকে রপ্তানিকারক ডিএসভি এয়ার এন্ড সি লিমিটেড নামক একটি প্রতিষ্ঠানের গার্মেন্টস পণ্যবাহী চারটি ট্রাক ভারতে প্রবেশ করতে না পেরে ফেরত যায়।
বেনাপোল স্থলবন্দরের উপপরিচালক (ট্রাফিক) মামুন কবীর তরফদার জানান, ট্রানশিপমেন্ট সুবিধা বাতিলের কারণে কার্গো বিমান সুবিধা নিয়ে তৃতীয় দেশের উদ্দেশ্য আসা পণ্যবাহী ট্রাক ভারতে ঢুকতে পারছে না। তবে ভারতের ভূখণ্ড ব্যবহার করে নেপাল, ভুটানে রপ্তানি বাণিজ্য স্বাভাবিক রয়েছে।