ডেস্ক রিপোর্ট: জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়া ও যুক্তফ্রন্টের নেতৃত্বে বৃহত্তর ঐক্য শুরুতেই হোঁচট খেয়েছে। যুক্তফ্রন্ট এবং ঐক্য প্রক্রিয়ায় কে কার লোক তা নিয়ে চর্চা চলছে। এখানে একেক জন একেক এজেন্ডা নিয়ে এসেছে বলে কথা হচ্ছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এই প্রক্রিয়ায় ড. কামাল হোসেন ড. ইউনূসের প্রতিনিধি হেসেবে জোটভুক্ত হয়েছেন। মান্না জোটে এসেছেন বিএনপির এজেন্ডা বাস্তবায়নের জন্য। আর মাহী বি. চৌধুরী হলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি। এই তিনজনের উদ্দেশ্য ভিন্ন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মদদে এবং ড. ইউনূসের পৃষ্ঠপোষকতায় মাঠে নেমেছেন গণফোরাম নেতা ড. কামাল হোসেন। তাঁর পিছনে আছে সুশীল সমাজের সমাজের কিছু চিহ্নিত মুখ। ড. কামাল হোসেন নির্বাচনের জন্য জাতীয় ঐক্য করতে আসেননি। একাধিক সূত্র বলছে, ঐক্যবদ্ধ হয়ে নির্বাচন বানচাল করে একটি অনির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতায় আনাই ড. কামাল হোসেনের মূল লক্ষ্য। এজন্যই তিনি বিএনপিকে ঐক্য প্রক্রিয়ায় চান। আরেকটি ওয়ান ইলেভেনের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টিই ড. কামাল ও ড. ইউনূসের মূল লক্ষ্য। এজন্য তিনি এত সরব। ড. কামাল সাম্প্রতিক সময়ে অন্তত দুটি বক্তৃতায় নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তার কথা বলেছেন। বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের সঙ্গে এক মত বিনিময়ে তিনি বিচারপতি সিনহার পক্ষেও কথা বলেছেন। তিনি (ড. কামাল হোসেন) এবং বিচারপতি সিনহা মিলে একটি ‘সাংবিধানিক ক্যু’ করার চেষ্টা করেছিলেন বলেও অভিযোগ আছে।
ঐক্য প্রক্রিয়ার অন্যতম সক্রিয় নেতা সাবেক আওয়ামী লীগ নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। যুক্তফ্রন্টের নেতারাই তাকে বিএনপির প্রতিনিধি হিসেবে ডাকে। যুক্তফ্রন্টের বৈঠকে তিনি বিএনপির পক্ষেই কথা বলেন। তারেক জিয়ার সঙ্গেও তাঁর যোগাযোগ রয়েছে বলে জানা গেছে। মান্না বিএনপিকে নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে নির্বাচনে যাওয়ার পক্ষপাতী। মান্না মনে করেন, ঐক্যবদ্ধ নির্বাচন করলে বর্তমান সরকারের পরাজয় অনিবার্য। বিএনপি যেমন নির্বাচনের সব প্রস্তুতি নিচ্ছে, হঠাৎ নির্বাচনে যাবার ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগকে চমকে দিতে চায়। তেমনি মান্নাও নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগকে একঘরে করতেই বিএনপির পক্ষ থেকে মাঠে নেমেছেন বলে জানা গেছে। ঐক্য প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি মনে করা হয় মাহী বি. চৌধুরীকে।
মাহীর জন্যই যুক্তফ্রন্ট থেকে বিএনপিকে জামাত ছাড়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। ঐক্য হলে বিএনপির শরিকদের দেড়শ আসন ছেড়ে দেয়ার প্রস্তাব মাহী বি. চৌধুরীর। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, মাহীর লক্ষ্য হলো সব দল গুলোকে ঐক্যবদ্ধ করে এবং বিএনপির বড় একটি অংশকে নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ। নির্বাচনের মাধ্যমে একটি সেক্যুলার বিরোধী দল গঠন। যুক্তফ্রন্ট এবং মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের নেতৃত্বে বিএনপির একাংশকে নিয়ে নির্বাচনে যাওয়াই মাহীর এজেন্ডা। তবে তিনি নেপথ্যে থেকেই কাজ করছেন। তাঁর ইচ্ছাগুলো বাস্তবায়নে প্রকাশ্যে কথা বলছেন তাঁর পিতা, সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক ডা. বদরুদ্দোজা চৌধুরী। জানা গেছে, ছেলের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কিছুই করেন না বি. চৌধুরী। এ কারণেই ১৫ সেপ্টেম্বর ঐক্য প্রক্রিয়ায় যাননি অধ্যাপক চৌধুরী। এই ত্রিমুখী এজেন্ডায় শেষ পর্যন্ত কার এজেন্ডা জয়ী হয় অথবা শেষ পর্যন্ত কোন ঐক্য থাকে কিনা সেটিই দেখার বিষয়।
বাংলা ইনসাইডার