সব যেন সাজানো গোছানো মঞ্চ। শুধু আনুষ্ঠানিকতা বাকি মাত্র। জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সেটারই মঞ্চস্থ হলো আজ। শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তানকে হারিয়ে এশিয়া কাপের ফাইনাল খেলা বাংলাদেশের কাছে সবার যে প্রত্যাশা ছিল সেটাই হয়েছে। আগের দুই ম্যাচে জয় পেয়ে সিরজ নিশ্চিত করেছিল। আর সিরিজের শেষ ম্যাচে সফরকারীদের ৭ উইকেটে হারিয়ে চতুর্থবারের মতো জিম্বাবুয়েকে হোয়াইটওয়াশ করার পাশাপাশি টানা ১৩ ম্যাচ জয় পেলো টাইগাররা।
ইমরুল-সৌম্য জুটিতে ভর করে বড় রানের লক্ষ্যটা একেবারে মামুলি বানিয়ে ফেলে স্বাগতিকরা। সৌম্য সরকারের দ্বিতীয় এবং ইমরুল কায়েসের চতুর্থ শতকে খুব সহজেই সফরকারীদের হারায় স্বাগতিকরা। ২৮৬ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে কোনো রকম চাপ ছাড়াই ৪৭ বল ও ৭ উইকেট হাতে রেখে বাংলাওয়াশ নিশ্চিত করে টাইগাররা।
পুরো সিরিজ জুড়েই যেন অন্য এক ইমরুল কায়েসকে দেখলো বাংলাদেশ। তামিম না থাকায় দায়িত্বটা যেন অঘোষিতভাবেই ইমরুলের কাঁধে বর্তে যায়। আর সেই দায়িত্বটা ভালোভাবেই পালন করলেন ইমরুল। শুধু তাই নয়, দায়িত্ব নিয়ে ভেঙেছেন সেই তামিমেরই গড়া এক রেকর্ড। তিন ম্যাচ সিরিজে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকে তালিকায় চতুর্থস্থানে থাকা তামিমকে সরিয়ে সেখানে জায়গা করেন এবং পরে নিজেকে আরো সামনে নিয়ে যান। প্রথম ম্যাচে ১৪৪, দ্বিতীয় ম্যাচে ৯০ এবং আজ ১১৫! তিন ম্যাচ শেষে মোট রান ৩৪৯। তিন ম্যাচ সিরিজে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নিয়েছেন। ৩৬২ রান নিয়ে বাবর আজম আছেন তালিকার প্রথমে।
প্রথম দুই ম্যাচ জয়ে সিরিজ জয় করার পর আজ বেশ নির্ভার দল নিয়েই মাঠে নেমেছিলেন মাশরাফি বিন মর্তুজা। অভিষেক ঘটে আরিফুল হকের। এই ম্যাচে বসিয়ে রাখা হয়েছিল মুস্তাফিজ, মিরাজ এবং দুই ম্যাচে ‘ডাক’ মারা ফজলে রাব্বীকে। তাছাড়া সাকিব-তামিম তো আগে থেকেই দলে নেই। কিন্তু তিন ম্যাচ সিরিজে যেন সেটা চোখেই পড়লো না। পুরো সিরিজে সবকটি বিভাগে আধিপত্য বজায় রেখে প্রত্যাশিত জয় পেয়েছে টাইগাররা। মুশফিক ২৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে টস জিতে ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের দলপতি মাশরাফি বিন মর্তুজা। আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেট হারিয়ে ২৮৬ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১২৯ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন শেন উইলিয়ামস। ১৪৩ বলে ১০ চার ও ১ ছক্কায় ১২৯ ক্যারিয়ারের সর্বোচ্চ এই ইনিংস খেলেন তিনি। এছাড়াও ৭২ বলে ৮টি চার ও ৩টি ছক্কায় ৭৫ রান করে আউট হন টেইলর। সিকান্দার রাজা ৪০ ও পিটার মুর করেন ২৮ রান।
বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নেন নাজমুল হাসান অপু। তাছাড়া মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও আবু হায়দার রনি ১টি করে উইকেট নেন। ম্যাচ সেরার পুরস্কার পান ৮১ বলে শতক করা সৌম্য এবং সিরিজ সেরার পুরস্কারের জন্য ইমরুল কায়েসকে বেছে নিতে মোটেও কষ্ট করতে হয়নি।