চট্টগ্রামে দাখিলকৃত রিটার্নের সংখ্যা ১৩ লাখ ২০ হাজার ৮২৫টি

মো.মুক্তার হোসেন বাবু : চট্টগ্রামে আয়কর রিটার্ন দাখিলের শেষ মুহূর্তে ভিড় বাড়ায় ভোগান্তিতে পড়ছেন গ্রাহকরা। তবে এ বছর রিটার্ন দাখিলের সময় বাড়ানো হবে না বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা রহমাতুল মুনিম। তিনি বলেন, আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় ৩০ নভেম্বর পর্যন্তই থাকবে, সময় বাড়ানোর কোনো সুযোগ নেই, সময় বাড়ানো হচ্ছে না।
গতকাল রোববার এনবিআরের সম্মেলন কক্ষে ‘মাসব্যাপী কর সেবাদান এবং ৩০ নভেম্বর জাতীয় আয়কর দিবস-২০২০ উদযাপন’ উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ২৬ নভেম্বর পর্যন্ত রিটার্ন জমা হয়েছে ১৩ লাখ ২০ হাজার। পরিশোধিত কর ২ হাজার ৩৮৭ কোটি টাকা। তবে, আমাদের সক্ষমতা বাড়লেও কাঙ্খিত মাত্রায় আয়করের ক্ষেত্র এখনও বাড়েনি।
আবু হেনা রহমাতুল মুনিম বলেন, টিআইএনধারীদের রিটার্ন দেওয়া বাধ্যতামূলক, না দিলে জরিমানা গুনতে হবে। আয়কর আইনানুযায়ী উপকর কমিশনার করদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে রিটার্ন জমা দুই মান সময় দিতে পারে। তবে করদাতাকে দুই শতাংশ হারে জরিমানা দিতে হবে।
আবু হেনা রহমাতুল মুনিম বলেন, যারা আগে রিটার্ন জমা দিয়েছেন বা টিআইএনধারি রিটার্ন জমা দেননি তাদের একটা বিরাট অংশ মনে করবে রিটার্ন জমা দেবেন না। এরপর যখন নোটিশ যাবে জরিমানা হবে, তখন ঠিকই মনে করবে। কিন্তু তাদের জন্য সময় বাড়িয়ে লাভ নেই। নিয়ম অনুযায়ী আইনে যা আছে রিটার্ন জমা না দিলে তাই হবে। এর আগে এমনটা হয়নি, এবারইতো আমরা বাধ্যতামূলক করেছি। সময় বৃদ্ধি নিয়ে যথেষ্ট হয়েছে। এবছর আর সে সুযোগ দিতে চাই না।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মোট টিআইএনধারী করদাতা সংখ্যা ৫০ লাখ ৭২ হাজার ৫৬৭ জন। গত বৃহস্পতিবার (২৬ নভেম্বর) পর্যন্ত দাখিলকৃত রিটার্নের সংখ্যা ১৩ লাখ ২০ হাজার ৮২৫টি। যা গত বছর ছিল ১২ লাখ ৫৭ হাজার ৬২৬টি। আর ওই সময়ে রিটার্নের সঙ্গে পরিশোধিত কর ২ হাজার ৪৮৭ টাকা। যা গতবছর ছিল ৩ হাজার ৫৮০ টাকা। এসময় উপস্থিত ছিলেন এনবিআরের সদস্য (করনীতি) আলমগীর হোসেন, সদস্য অপূর্ব কান্তি দাস, হাফিজ মোরশেদ প্রমুখ।
এদিকে আয়কর রিটার্ন দাখিলের সময় শেষ হচ্ছে আজ সোমবার। তাই শেষ মুহূর্তে ভিড় বাড়ছে চট্টগ্রামের কর অঞ্চলগুলোতে।আগ্রাবাদের সিডিএ আবাসিকের কর ভবনগুলোতে এখন উৎসবমুখর পরিবেশ। তবে অনেক গ্রাহক ভিড়ের মধ্যে ভোগান্তিতে পড়ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, বিভিন্ন শ্রেণি ও পেশার মানুষের রিটার্ন দাখিলের সুবিধার্থে মেলার আঙ্গিকে বুথ করে দিয়েছে কর্তৃপক্ষ। বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে ছাপানো রিটার্ন ফরম, চালান ইত্যাদি। লাইনে দাঁড়িয়ে একের পর এক করদাতা রিটার্ন ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিচ্ছেন। কর অঞ্চলগুলোর পাশাপাশি ব্যস্ততা বেড়েছে কাছের সোনালী ব্যাংকের শাখাটিতেও।
চট্টগ্রাম কর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. আনিসুর রহমান বলেন, শেষদিকে আয়করদাতার চাপ বেড়েছে। যারা নানা জটিলতা বা স্টেটমেন্ট সংগ্রহ করতে না পারায় রিটার্ন দাখিলে অপারগ তারা সময় চেয়ে আবেদন করছেন। সার্কেল থেকে দুই মাসের সময় দেওয়া হচ্ছে। এরপর প্রয়োজনে জোনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা আরও দুই মাসের সময় দিতে পারবেন। কিন্তু যাদের টিন আছে সবাইকে রিটার্ন দাখিল করতে হবে। আমাদের সমিতির সদস্যরা করদাতাদের সর্বাত্মক সেবা দিচ্ছেন।
চট্টগ্রামের কর অঞ্চল-৪ এর কমিশনার ব্যারিস্টার মুতাসিম বিল্লাহ ফারুকী বলেন, প্রতিটি কর অঞ্চলের মতো আমরাও ভবনের নিচে নির্দিষ্ট সার্কেলের জন্য বুথ করে দিয়েছি। তথ্যকেন্দ্র খুলেছি। যেখানে রিটার্ন ফরম, চালান, সময় বাড়ানোর আবেদন ইত্যাদি সরবরাহ করা হচ্ছে। বৈশ্বিক মহামারী করোনার দ্বিতীয় ঢেউ মোকাবিলায় রিটার্ন দাখিল করতে আসা সম্মানিত করদাতাদের মাস্ক পরাটা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

সর্বশেষ