তৌহিদুর রহমান : চট্টগ্রাম মহানগরীতে চলন্ত বাস থেকে এক যাত্রীকে ফেলে হত্যার ঘটনায় বাসের সেই সহকারী মো. মানিক সরকারকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গতকাল শনিবার ভোর রাত চারটার দিকে লক্ষীপুরের রামগতি উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) সদস্যরা তাঁকে গ্রেফতার করে। এর আগে গত ২৭ আগস্ট চট্টগ্রাম শহরতলীর সিটি গেট এলাকায় চলন্ত বাস থেকে রেজাউল করিমকে (৩৫) ফেলে দেয়া হয়। মুহূর্তের মধ্যে বাসের চাকায় পিষ্ট হন তিনি। মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাত পান রেজাউল। হাসপাতালে নেওয়ার পর তাকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনে রেজাউলের শরীরের আঘাতের কথা উল্লেখ রয়েছে।
পিবিআই চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাঈন উদ্দিন বলেন, গোপন খবরের ভিত্তিতে শনিবার ভোররাতে লক্ষীপুরের গ্রামের বাড়ি থেকে মানিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। চট্টগ্রামে আনা হয়েছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, ২৭ আগস্ট বেলা ১টা ৪০ মিনিটের দিকে নগরের প্রবেশমুখ সিটি গেটের পাশে গ্ল্যাক্সো কার্যালয়ের সামনে রেজাউল করিমকে লুসাই পরিবহন লিমিটেড নামের একটি বাস থেকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে হত্যা করা হয়। বাসের সহকারী মানিকের সঙ্গে বাকবিতন্ডার সূত্র ধরে তাকে চলন্ত বাস থেকে ফেলে দেওয়া হয় বলে সহযাত্রী ও স্বজনদের অভিযোগ। নিহত রেজাউল সিটি গেট এলাকার কালিরহাটের ওয়ালি উল্লাহর ছেলে। এই ঘটনার প্রতিবাদে ২৭ আগস্ট সিটি গেট এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এক ঘণ্টা অবরোধ করেছিলেন এলাকাবাসী। চট্টগ্রামসহ সারা দেশে এই ঘটনায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। চট্টগ্রাম নগরের চার নম্বর যাত্রাপথের লুসাই পরিবহন লিমিটেড নামের বাসটির মালিক মো. শাহাবুদ্দিন। তিনি পুলিশকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করেছেন। বাসটির কাগজপত্রের মেয়াদ আগামী বছরের ২৯ জুলাই পর্যন্ত রয়েছে। বাসের সহকারী মো. মানিক সরকার নগরের কৈবল্যধাম আবাসিক এলাকার ফিরোজ শাহ কলোনিতে বাস করতেন। যাত্রীকে বাস থেকে ফেলে দেয়ার পর তিনি এবং চালক গা ঢাকা দেন। এই ঘটনায় চালক এখনো গ্রেফতার হননি।
এদিকে রেজাউলকে চলন্তবাস থেকে ফেলে হত্যার ঘটনায় চট্টগ্রাম নগরের আকবর শাহ থানায় পরদিন ২৮ আগস্ট দন্ডবিধির ৪০২, ৩২৫ ও ৩৪ ধারায় মামলা হয়। নিহত রেজাউলের মামা আহমেদুর রহমান মামলাটি দায়ের করেন।