চট্টগ্রাম জোনে শক্তিশালী হচ্ছে বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা : চার হাজার কোটি টাকার দু’প্রকল্প

মো.মুক্তার হোসেন বাবু : চট্টগ্রাম জোনে বিদ্যুৎ সংকট দূরীকরণে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার দুইটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে সরকার। এর মধ্যে এক হাজার ৪শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম ও ২ হাজার ৬শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে দ্বিতীয় প্রকল্প রয়েছে। চট্টগ্রাম জোনে এই দুই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে প্রায় ২০ লক্ষ গ্রাহকের বিদ্যুৎ ভোগান্তি দূর হওয়ার পাশাপাশি অর্থনীতিতে সারাদেশের মতো চট্টগ্রামও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে এমনটি বলেছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্র জানায়, চট্টগ্রামে বছরে ৮ থেকে ১০ শতাংশ হারে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। বর্তমানে চট্টগ্রাম জোনে ১০ লাখ পিডিবি’র ও ১০ লাখ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি মিলে ২০ লাখ গ্রাহক রয়েছে। তবে এতদ অঞ্চলে বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে ৮০০ মেগাওয়াট, চাহিদা আছে এক হাজার ১শ’ মেগাওয়াট। এদিকে শক্তিশালী বিতরণ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এজন্য এক হাজার ২৮৩ মেগাওয়াট লোড ধারণের উপযোগী নতুন সঞ্চালন লাইন স্থাপন, সাবস্টেশন নির্মাণ, পুনর্বাসন ও ক্ষমতাবৃদ্ধির কাজ হাতে নেয়া হয়।
এ দুই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে চট্টগ্রামে এক মিনিটের জন্যও বিদ্যুৎ যাবে না উল্লেখ করে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রাম দক্ষিণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন ভোরের ডাককে জানান, শিল্পকারখানায়ও চাহিদা পরিমাণ বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া যাবে। তখন অর্থনীতিতে সারাদেশের মতো চট্টগ্রামও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবে। তিনি বলেন, ২০১৯ ও ২০২২ সাল মেয়াদ পর্যন্ত ৪ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে দুই প্রকল্পের মধ্যে প্রথম প্রকল্পের ১৪টি সাবস্টেশনের (৩৩/১১ কেভিএ) কাজ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় প্রকল্পের ২৬টি সাব স্টেশনের কাজ ২০১৯ সালের মধ্যে শুরু হবে। আগামী ১০ থেকে ১৫ বছর টার্গেট করে প্রকল্পগুলো নেওয়া হয়েছে।
পিডিবি সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামে শক্তিশালী বিদ্যুৎ বিতরণ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০২২ সালের মধ্যে ৫০টি সাবস্টেশন যুক্ত হবে। সে হিসেবে আগের ৫২টিসহ সাবস্টেশনের সংখ্যা দাঁড়াবে ১০২টিতে। মূলত ২০৩০ সাল পর্যন্ত চাহিদাকে টার্গেট করে এই দুই প্রকল্পের আওতায় ৫০ সাবস্টেশন যুক্ত হবে। এরমধ্যে ২০১৯ সালের জুনের মধ্যে ১৪টি সাবস্টেশন ও ২০২২ সালের ডিসেম্বরে বাকি ৩৬টি সাবস্টেশনের কাজ শেষ হবে। এক হাজার ৪শ’ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রথম প্রকল্পের ১৪টি সাবস্টেশনের কাজ ইতোমধ্যে শুরু হয়েছে। সাবস্টেশনগুলো হচ্ছে-কল্পলোক আবাসিক এলাকা, অনন্যা আবাসিক এলাকা, মইজ্জ্যারটেক, রহমতগঞ্জ, মনসুরাবাদ, অক্সিজেন, কালুরঘাট, এশিয়ান উইমেন ইউনিভার্সিটি, আনন্দবাজার, কাট্টলী, মাদাম বিবিরহাট, স›দ্বীপ, বান্দরবান এবং রামু এলাকা। এছাড়াও ক্ষমতাবৃদ্ধির জন্য নির্বাচিত ৪টি সাবস্টেশন হলো-বাকলিয়া, খুলশী, হাটহাজারী এবং চকরিয়া সাবস্টেশন। এরমধ্যে স›দ্বীপ সাবস্টেশনের কাজ শেষ হয়েছে, বিদ্যুতও সরবরাহ করা হয়েছে এলাকায়। দ্বিতীয় প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৬শ’ কোটি টাকা। এ প্রকল্পের কাজ ২০১৯ সালের মধ্যে শুরু হবে আর শেষ হবে ২০২২ সালের ডিসেম্বরে।

সর্বশেষ