খালেদা জিয়া যদি বাইরে থাকেন তাহলে জনগণের যে বাঁধভাঙা ঢল, সেই ঢলকে তারা প্রতিরোধ করতে পারবে না

জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বাদ দিতে সরকার ‘জিয়া এতিমখানা ট্রাস্ট মামলা’ উচ্চ আদালতে দ্রুত নিষ্পত্তির চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর নয়া পল্টনের বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের এক অনুষ্ঠানে দলটির মহাসচিব এ অভিযোগ করেন।

ফখরুল বলেন, ‘বাংলাদেশে ইতিহাসে নজিরবিহীন সব ঘটনা ঘটিয়ে চলেছে এই সরকার। হাইকোর্ট জামিন দেওয়ার পরে সুপ্রিম কোর্টে স্থগিত করা হয় এই ৫ বছরের সাজার-এটার ইতিহাসে নজির নেই। তারা করেছেন। নজির নেই যে, মাত্র ৩-৪ মাসের মধ্যে এই আপিলটাকে চূড়ান্ত নিম্পত্তি করার নির্দেশ দেওয়া- এটারও নজির নেই।’

‘অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে এই মামলাটিকে একটি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তারা(সরকার)কাজ করছে।দুর্ভাগ্য হচ্ছে যে,এই নির্দেশ-আদেশগুলো আসছে উচ্চ আদালত থেকে বিচার বিভাগ থেকে।যেটা সর্বশেষ স্থান যেখানে অন্যায়-অত্যাচার-নিপীড়নের বিরুদ্ধে মানুষের যাওয়ার একমাত্র জায়গা ছিলো বিচার বিভাগ। দুর্ভাগ্য আমাদের আজকে সেই বিচার বিভাগকেও সরকার তাদের কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে।’

মির্জা ফখরুল আরও বলেন, ‘তারা (সরকার)মনে করে যে, খালেদা জিয়া যদি বাইরে থাকেন তাহলে জনগণের যে বাঁধভাঙা ঢল, সেই ঢলকে তারা প্রতিরোধ করতে পারবে না। আগামী নির্বাচনে দেশনেত্রী যদি অংশ নেন তাহলে সেই নির্বাচনে তাদের ভরাডুবি কেউ ঠেকাতে পারবে না। এজন্য তারা সুপরিকল্পিতভাবে চক্রন্ত করে, মিথ্যা সাজানো মামলা দিয়ে নির্বাচনের আগেই এই মামলার কার্যক্রম শেষ করে তাকে কারাগারে পাঠিয়েছে।’

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে পুলিশের নির্যাতন, গ্রেপ্তার ও দমনপীড়নের মধ্য দিয়ে সেখানে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছে। নির্বাচনের দিনে জনগণকে ভোটকেন্দ্রে যেতে না দিয়ে তারা ভোট ডাকাতি করেছে। পত্র-পত্রিকায় সব কিছু এসেছে। ইলেকট্রিক চ্যানেলে এসেছে। এমনকি মার্কিন রাষ্ট্রদূত পর্যন্ত বলেছেন,খুলনার নির্বাচনে যে অনিয়ম হয়েছে তার তদন্ত হওয়া উচিৎ।’

‘এই নির্বাচন তদন্ত করবেন না। এই কমিশন পুরোপুরিভাবে সরকারের বংশবদ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। সারা পৃথিবী জানে বাংলাদেশে কোনো গণতন্ত্র নাই, গণতন্ত্রের কোনো স্পেস নেই।’

এই অবস্থা থেকে উত্তরণে মহানগর দক্ষিণকে সংগঠিত হয়ে আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানান ফখরুল। তিনি বলেন, ‘গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হলে, খালেদা জিয়াকে মুক্তি করতে হলে, আমাদেরকে জাতীয় ঐক্য তৈরি করতে হবে। এই জাতীয় ঐক্যের মধ্য দিয়ে যে পাথর আমাদের বুকের ওপর বসে আছে, সেই পাথরকে সরাতে হবে, এই দানবকে সরাতে হবে। আমি অনুরোধ জানাব, মহানগর দক্ষিণ আপনার সংগঠিত হোন যখনই প্রয়োজন হবে আপনারা যেন রাস্তায় নামতে পারেন।’

একই সঙ্গে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির মতো কোনো নির্বাচন দেশে হতে দেওয়া হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন ফখরুল।